দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নাক নিয়ে কত রকম প্রবাদই না রয়েছে। এই যেমন কেও কোনো খারাপ কাজ করলে বলা হয়, ১নাক কাটা যাবে’। এবার বিষয় এসেছে একটু ব্যতিক্রমি। এবার বিতর্ক উঠেছে, পুরুষের নাক বড়- নাকি নারীদের নাক?
নাক নিয়ে এতো আলোচনার প্রবাদ যখন শোনা যায় ঠিক ব্যতিক্রমে প্রসঙ্গ এবার এসেছে আর তা হলো কার নাক বড়? পুরুষের নাকি নারীদের। এমন প্রশ্ন নিয়ে গবেষণা করতে করতে এক সময় এ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন গবেষকরা। তারা পেয়েছেন পুরুষের নাকই নাকি বড়। এই ছোট, বড়, টিকালো, বোঁচা নাকের রকমফের দিয়ে মানুষকে অনেক সময়ই আলাদা করা হয়ে থাকে। কিন্তু লিঙ্গভেদে নাকও যে বদলে যায়, এমনটা আগে জানা ছিল না কারও।
যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি যদি সত্যিই মেনে নেওয়া যায় তাহলে ঘটনা কিন্তু এমনটাই হয়। সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব ফিজিক্যাল অ্যানথ্রোপলজিতে প্রকাশিত হয়েছে তাদের এই গবেষণা। গবেষক দলের অন্যতম নাথান হল্টনের দাবি, পরিণত বয়স্ক পুরুষের নাক মেয়েদের থেকে বেশ কিছুটা বড় হয়। এর কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অক্সিজেন লাগে অনেক বেশি। মানুষের পেশির মোট পরিমাণকে বলে ‘লিন মাসল মাস’ বা ‘লিন বডি মাস’, সংক্ষেপে বলা হয়, এলবিএম। দৈহিক গঠন অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবেই ছেলেদের শরীরে এলবিএমের পরিমাণ মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি। পেশির এই শক্তি জোগানের জন্যই ছেলেদের অনেক বেশি অক্সিজেন লাগে। আর তাই অভিযোজনের ফলে ছেলেদের নাক একটু বেশি বড় হয়ে গেছে মেয়েদের নাকের থেকে।
গবেষকরা এ গবেষণার জন্য নাথানরা ৩৮ জন ইউরোপীয়কে বেছে নেন। তাদের তিন বছর বয়স থেকে মধ্য কুড়ি পর্যন্ত নাকের গঠনের কি ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে, তা নিয়মিত পরীক্ষা করতেন। দীর্ঘ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম দিকে ছেলে আর মেয়েদের নাকের গঠনে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু ১১ বছর বয়সের পর থেকেই, অর্থাৎ বয়ঃসন্ধি থেকেই ছেলেদের নাকের আকার মেয়েদের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি বাড়তে শুরু করে। আর এভাবেই বড় হয় ছেলেদের নাক।
নাথানের দাবি, প্রাগৈতিহাসিক মানুষের থেকে আধুনিক যুগের মানুষের নাক ছোট কেন- এ গবেষণা থেকে তারও প্রমাণ মিলেছে। গবেষণার তথ্য মতে, নিয়ানডারথাল বা তখনকার গুহামানব অনেক বেশি পেশিবহুল ছিল। ফলে তাদের অক্সিজেনও লাগত অনেক বেশি। তাই নাকও ছিল অনেক বড়।
নাথানদের এই গবেষণা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। মাত্র ৩৮ জনকে পরীক্ষা করে এমন সিদ্ধান্তে আসা যায় কি-না, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। তার ওপরে ইউরোপীয়দের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে, সেটা অন্য মহাদেশের মানুষের মধ্যেও দেখা যাবে কি-না, তাও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ নিয়ে যে আরও গবেষণা দরকার, তা মেনে নিয়েছেন নাথানও। তবে পেশিবহুল গুহামানবদের তুলনায় অনেক রোগা-পাতলা মানুষের নাকের আকার কমেছে- এটা যেমন সত্যি, তেমনি ছেলেমেয়েভেদে নাকের আকারও যে বদলায়, এটাও সব মানুষের ক্ষেত্রে সত্যি বলে প্রমাণিত হবে একদিন- নাথানএমনটাই আশা করছেন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।