দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মে দিবস এলে শ্রমিকদের কথা বেশি করে প্রকাশ হয়। কিন্তু তারপর আর কোনো খোঁজ থাকে না। শ্রমিকরা যে মজুরি পান তা দিয়ে চলে না তাদের সংসার। কিন্তু দেখার কেও নেই। দেখা গেছে, আমাদের দেশে কৃষি শ্রমিকরা সবচেয়ে কম মজুরি পান।
কৃষি খাত আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হলেও এই খাতের দিনমজুরেরাই সবচেয়ে অবহেলিত। কৃষিতে রয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার মজুর। একজন সপ্তাহে ৫০০ টাকার কম মজুরি পেয়ে থাকেন। সেই হিসাব অনুযায়ী দৈনিক গড়ে ৭১ টাকা মজুরি আসে। গ্রামে-গঞ্জে মজুরি এ অবস্থা সাধারণ শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে।
সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১০ থেকে এই মজুরি হারের চিত্র থেকেই এই তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এই জরিপ করে। সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশও করা হয়। তবে বর্তমানে বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের মজুরি আনুপাতিক হারে কিছুটা বেড়েছে।
বিবিএসের জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের শ্রমিকেরা দৈনিক গড়ে ১৮৩ টাকা মজুরি পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশে কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ, জ্বালানি, পরিবহন এবং আবাসন খাতসহ মোট ১ কোটি ৫ লাখ ৮৪ হাজার দিনমজুর আছে। ওই তথ্যে বলো হয়েছে, এদের মধ্যে ৭০ শতাংশ শ্রমিকেরই আয় দৈনিক ২০০ টাকারও নিচে।
তবে আবাসন, ব্যাংক, বিমা, স্বাস্থ্য, কারিগরি, শিক্ষা খাতসহ সরকারি কর্মচারীরা তুলনামূলক ভালো মজুরি পান বলে পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়। তবে এসব খাতে শ্রমিকের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম।
বাংলাদেশে ৯৫ শতাংশ চাকরিজীবি মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকারও কম বেতন পেয়ে থাকেন। সারাদেশে চাকরিজীবির সংখ্যা সোয়া ৩ কোটি। আর ২ লাখ ৯১ হাজার চাকরিজীবী ৩৫ হাজার টাকার বেশি বেতন পেয়ে থাকেন।
অপরদিকে মজুরিবৈষম্যে দিক থেকে নারীরা বেশি অবহেলিত। তারা সবচেয়ে কম মজুরি পান। অথচ পরিশ্রম করেন পুরুষের মতই। পরিসংখ্যান হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ৮ লাখ ৪৯ হাজার। পুরুষ দিনমজুরেরা পান গড়ে ১৮৪ টাকা। আবার একই পরিশ্রম করে নারীরা পান ১৭০ টাকা। তবেে এক্ষেত্রে শহরে নারী-পুরুষের মজুরির বৈষম্য কিছুটা কম, গ্রামে এই বৈষম্য বেশি। শহরে নারী-পুরুষেরা গড়ে প্রায় সমান মজুরি পেয়ে থাকেন।
মজুরি বৈষম্য দুর করতে না পারলে শ্রমিকদের ন্যায্য পাপ্যতা কখনও পূর্ণ হবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। মে দিবসের প্রকৃত অর্থও রয়ে যাবে অসম্পূর্ণ। মহান মে দিবসে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক সে প্রত্যাশা আমাদের সকলের।