সৃষ্টিকূলে কত যে প্রাণী রয়েছে তার হিসাব পাওয়া প্রায় দুষ্কর। এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যার কোন পরিচয় ও আদিপাত্য আমাদের জানা নেই। এমনই ৫টি স্তন্যপায়ী প্রাণীর কাহিনী তুলে ধরা হবে। যে প্রাণী ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে দেহের রংও পরিবর্তন করে।
নানা বৈচিত্র্যে ভরপুর আমাদের জীব-জগত। কেও বাস করে জলে, কেও আবার ডাঙ্গায় আবার কেওবা উভয়স্থানে বাস করে। কেও মরুভূমির প্রখর খরতাপে, আবার কেওবা পর্বত সমান তুষার অঞ্চলে। প্রাণী জগতের জীব বৈচিত্র্য তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলে।
কিন্তু একটু চিন্তা করে ভাবা যায়, প্রাণী জগতের বসবাসের অযোগ্য তুষার অঞ্চলে যেই প্রাণী বাস করে, সেই প্রাণী গ্রীস্মের খরতাপে টিকে থাকে কিভাবে?
প্রকৃতির কি অপরূপ বিস্ময়। তুন্দ্রা অঞ্চলে অর্থাৎ Arctic Zone এ এমন কিছু প্রাণী আছে যাদের দেহের ধরণ, রং ও লোম পরিবর্তিত হয় ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে। অর্থাৎ শীতকালে একরকম, গ্রীস্মকালে আরেক রকম।
এরকম ৫টি প্রাণী যাদের ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে গায়ের রং পরিবর্তিত হয়। আসুন এই ৫টি প্রাণীর পরিচয় জেনে নিই:
(১) Arctic Fox: সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে Arctic Fox এর বাদামি রং ঢেকে যায় বড় সাদা শুভ্র লোমের নীচে। আবার গ্রীস্মকাল আসলে পুনরায় বাদামি রঙের লোম হয়ে যায় প্রকৃতিগতভাবে।
(২) Artic Hear: Arctic Fox এর মতো Artic Hear এরও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে গায়ের রং পরিবর্তিত হয়। গ্রীস্মে বাদামি লোমের সাথে কালো ছোট ছোট দাগবিশিষ্ট লোম থাকে। আবার শীতকালে পবিত্রতার প্রতীক স্বরূপ শ্বেত শুভ্র রং ধারণ করে এরা।
(৩) Ptarmigan: দক্ষিণ আমেরিকা পর্বত অঞ্চলে এদের দেখা যায়। এরা Game Bird নামে পরিচিত। গ্রীস্মে এদের প্রকৃত রং থাকে কালো বাদামি এবং তুষার ধবল। কিন্তু তাদের লেজটি শীত-গ্রীস্ম সবসময়ই বাদামি রঙের থাকে। শীতেও এটি তুষারের রঙে তুষারের সাথে সহজে মিলিয়ে যেতে পারে। এরা সাধারণ উঁচু পাহাড়ের মাথার দিকে থাকে।
(৪) Barnen – Ground Caribou: Caribou সবসময় দলবদ্ধ হয়ে থাকে। শীতে এদের দেহের রং বাদামি ও শুভ্র সাদা থাকে। গ্রীস্মে ধূসর বাদামি গায়ের রং এবং ঘাড়ের দিকে মলিন সাদা হয়ে থাকে। অর্থাৎ শীত ও গ্রীস্মে সবসময় বাদামি রং থাকে।
(৫) Ermine: Ermine এক ধরনের বেজি। যার লেজটি কিছুটা ছোট থাকে। এটি নিশাচর প্রাণী। গ্রীস্মে পেটের দিকের অংশ সাদা এবং পিঠের দিকের অংশ বাদামি রঙের হয়ে থাকে। আবার এটি শীতে সাদা রঙের লোম থাকে এবং তারমাঝে হালকা ছোট ছোট বাদামি দাগ থাকে।
সৃষ্টিকর্তার কি নিপুণ কারুকাজ। প্রকৃতিগতভাবে এই প্রাণীগুলোর জন্য আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে চলার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেন। যাতে প্রতিকূল পরিবেশেও প্রাণীরা সহজে টিকে থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, শরীরের উষ্ণতার সাথে পরিবেশের তাপমাত্রা খাপ খাইয়ে চলতে পারে।