দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশুশ্রম আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। যে বয়সে শিশুদের লেখা-পড়া করার কথা সে বয়সে একজন শিশুকে জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে হচ্ছে। এই শিশুশ্রম জাতিকে পরিণত করছে একটি মেধাশূন্য জাতিতে।
এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশে শহরগুলোতে। শহরের পথে প্রান্তরে দেখা যায় শিশু শ্রমের দৃশ্য। শিশুশ্রম আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ হলেও সে আইন মানা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী ১৪ বছর বয়সের নীচে কোন শিশুকে নিয়মিত কাজে নিয়োগ না করার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কিন্তু তা সত্বেও বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শিশু নানা ধরনের কাজে নিয়োজিত। আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সের নীচের শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োগ করাও নিষিদ্ধ। কিন্তু এক্ষেত্রেও বাস্তবতা ভিন্ন।
শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন সেইভ দ্য চিলড্রেন বলছে, শিশুশ্রম নিরসনে নানা আইন আর নীতি থাকলেও এসবের কোন বাস্তবায়ন নেই। বিশেষ করে গৃহকর্মে নিয়োজিতরা আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
শহরগুলোতে এই শিশুশ্রমের সমস্যা আরও প্রকট। শহরের বস্তিগুলোর রিক্সা চালক বা দিনমজুরদের সন্তানদের এসব শ্রমে নিযুক্ত করা হয়। ছোট থেকেই লেখা-পড়া থেকে সরিয়ে শিশুদের নিয়োজিত করা হয় কাজে।
সামপ্রতিক সময়ে শিশুদের বেশির কঠিন কঠিন কাজে নিয়োগ করতে দেখা যাচ্ছে। ওয়েল্ডিং এর মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োজিত করা হচ্ছে। দেশের গার্মেন্টগুলোতেও অনেক শিশু নিয়োজিত রয়েছে। তবে বিদেশী সংস্থাগুলোর কড়াকড়ি আরোপের কারণে সামপ্রতিক সময়ে গার্মেন্টগুলোতে শিশুশ্রম কিছুটা কমেছে। কিন্তু অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ এখনও অব্যাহত রয়েছে। কখনও কখনও ইটভাটায় ইট বহনের মতো কঠিন কাজ করতে দেখা যায় এসব শিশুদের।
অনেক সময় দেখা যাচ্ছে বস্তির শিশুদের ডাস্টবিনে ময়লা টোকাতে। এতে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের রোগ-ব্যধি। এমনিভাবে নানা ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত হচ্ছে শিশুরা।
শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা ও সচেতন করতে হবে এসব নিম্নবৃত্ত মানুষদের মধ্যে। সমাজের বৃত্তবানদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসা দরকার। তা নাহলে এদেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম শিশুরা মেধাশূন্য হবে এবং এজাতি পরিণত হবে এক পঙ্গু জাতিতে।