দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ বলা হয় – বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহু দূর। ভ্রান্ত ধারণার শিকল ভেঙে মুক্ত বিশ্বাসে উপনীত হওয়াই হচ্ছে সভ্যতার লক্ষণ। পৃথিবীর উন্নত এবং সভ্য দেশ হিসাবে পরিচিত আমেরিকার অবস্থা ভিন্ন। জানা গিয়েছে – আমেরিকান নাগরিকরা একে অপরকে একদম বিশ্বাস করে না।
আমেরিকান নাগরিকরা সরকার, চার্চ কিংবা ওয়াল স্ট্রিটের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে – ব্যাপারটি এমন নয় বরং সর্বশেষ চার দশকে মানুষ একে অপরের প্রতি দিনকে দিন অবিশ্বাসী হয়ে পড়েছে।
১৯৭২ সালে করা সামাজিক সার্ভেতে যখন প্রথম প্রশ্ন করা হয়েছিলো তখন শতকরা পঞ্চাশ ভাগ আমেরিকান নাগরিক জানিয়েছিলেন তারা মানুষকে বিশ্বাস করেন। এখন দীর্ঘ চার দশক পর সেই সংখ্যা তিন ভাগের এক ভাগে পরিণত হয়েছে যারা অন্যদের বিশ্বাস করেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কর্তৃক সার্ভে থেকে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘ চল্লিশ বছরে অপরাধ কমেছে, দেশ দিনকে দিন আগের চেয়ে নিরাপদ হয়েছে কিন্তু মানুষ একে অপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে।
University of Maryland এর এরিক উসলানার জানান – যেসব মানুষ বিশ্বাস করে পৃথিবী সুন্দর জায়গা, দিনকে দিন ইহা সুন্দর হচ্ছে এবং ইচ্ছে করলে পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে তোলা যায় তাহলে অবশ্যই তারা বিশ্বাসী হবে। কিন্তু যদি মানুষ ভাবে পৃথিবী অন্ধকার এবং এটি এমন বহিঃশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যা কন্ট্রোল করা অসম্ভব, তাহলে মানুষ অবিশ্বাসী হবে।
সামাজিক বিজ্ঞানীদের মতে – সারাদিন রাত ব্যাপী যেসব ক্যাবল নিউজ অপরাধের ঘটনা কমে যাওয়ার পরেও অপরাধ হাইলাইট করে প্রচার করে – তারা মানুষের অবিশ্বাসী হওয়ার পেছনে দায়ী।
প্রযুক্তির উন্নয়ন, যান্ত্রিক জীবন, সামাজিক অবক্ষয়, ক্যাবল নিউজ কিংবা মুভিতে অপরাধকে গ্লোরিফাই করে প্রচার করা সবমিলিয়ে সভ্য আমেরিকান নাগরিকরা এসবের বাজে প্রভাব থেকে নিজেদের কতটুকু বাঁচিয়ে চলতে পেরেছে তার কোন গ্যারান্টি নেই বরং সার্ভে বলে দিচ্ছে ভিন্ন কথা – তাদের মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানোর কথা। যদিও অনেকের মতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এরকম সার্ভে বিশ্বাসযোগ্য নয় তবুও বিষয়টি নিয়ে আমেরিকানদের ভাবার প্রচুর সুযোগ আছে।
তথ্যসূত্রঃ গাওক্যার