ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এ যাবত যা প্রকাশ পেয়েছে তা হলো, ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তাকারী পাকিস্তানি চিকিৎসক শাকিল আফ্রিদির সাজা হয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-ইসলামের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে, সিআইএ’র সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে নয়। আদালতের এক নথিতে এমনটিই বলেছেন পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। কিন্তু আসলেও কি তাই? নাকি বলির পাঠা হয়েছেন শাকিল আফ্রিদি?
ওই নথি খতিয়ে দেখে সমপ্রতি এ তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত সপ্তাহে আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার উপজাতীয় এলাকার এক আদালত আফ্রিদিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে সহায়তা করায় দেশদ্রোহীতার অভিযোগে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
কিন্তু ৩০ মে সাংবাদিকদের সামনে প্রকাশিত বিচার সংক্রান্ত নথি অনুযায়ী, নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার অভিযোগে আফ্রিদিকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ওই জঙ্গিগোষ্ঠীটি নিজ রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
তবে এ বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়, কতিপয় পাকিস্তানি কর্মকর্তা প্রথমে কেন বলেছিলেন সিআইএকে সহায়তা করার অভিযোগে আফ্রিদিকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটন সম্পর্কের টানাপোড়েন চলাকালে পাকিস্তান হয়তো তাদের মার্কিনবিরোধী নাগরিকদের বুঝতে চেয়েছিল যে, মার্কিন গুপ্তচরদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক তারা মেনে নেয়নি। এদিকে চিকিৎসক শাকিল আফ্রিদির সঙ্গে কোন ধরনের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-ইসলাম। সুযোগ পেলে তাকে হত্যা করা হবে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি। আদালত শাকিল আফ্রিদিকে সিআইএ’র সঙ্গে কাজ করার জন্য নয় বরং লস্কর-ই-ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কের জন্যই দণ্ড দেয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়, শাকিলের এই জঙ্গি সংগঠনটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, সংগঠনটির প্রধান মঙ্গল বাগের জন্য শাকিলের ‘ভালোবাসা’ এবং সংশ্লিষ্টতা ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল বলেও আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়। তবে লস্কর-ই-ইসলামের একজন কমান্ডার বলেছেন, শাকিলের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কমান্ডার বলেন, এমন নির্লজ্জ লোকের সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। তার দেখা পেলে আমরা তাকে জ্যান্ত চিবিয়ে খাব। আদালত বলেছেন, আফ্রিদি লস্কর-ই-ইসলামকে ২০ লাখ রুপি দিয়েছেন এবং খাইবারে জঙ্গি কমান্ডারদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে সাহায্য করেছেন। তবে ওই কমান্ডার বলেন, ওই অর্থ ছিল রোগীদের কাছ থেকে বেশি অর্থ আদায়ের জন্য তার ওপর অর্পিত জরিমানা। তিনি বলেন, আফ্রিদি ও তার সহকর্মী ডাক্তাররা উপজাতীয় লোকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছিল। বিনিময়ে তারা তাদের নকল ওষুধ দিচ্ছিল এবং ভুয়া অপারেশন করছিল। আমাদের কাছে তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আসে এবং আমরা তাদের ওপর ২০ লাখ রুপি জরিমানা ধার্য করি। স্থানীয় লোকজনও বলেছে, আফ্রিদি শহরে তার নিজস্ব ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় অপারেশন করাতেন এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের জন্য বাগ শাকিল আফ্রিদিকে জরিমানা করেছিলেন।