দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের গণতন্ত্র নিয়ে মানুষ বড়ই শঙ্কিত। রাজপথে একজন শিশুর নীরব-নি:স্তব্ধ দেহ কি এমন ইঙ্গিতই বহন করে?
রাজনৈতিক সহিংসতা আর কত প্রাণ কেড়ে নেবে তা কেওই বলতে পারে না। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র শান্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। কি দোষ সে করেছিল তাও জানে না। রাজনীতির যে কিছুই বোঝেনা সেই ১১ বছর বয়সী শান্ত এখন নীথর শান্ত হয়ে পড়ে আছে মেডিক্যালের বেডে। ডাক্তাররা এখনও কোন নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না। কি হবে তা কেওই বলতে পারছে না। শান্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত শুক্রবার ফকিরাপুলে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের সময় জামায়াত-শিবির ও পুলিশের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মাথা ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয় শান্ত। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে আনা হয়। শান্তর গায়ে গুলি লাগার পর যখন সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন দীর্ঘ সময় সেভাবেই পড়ে ছিল। টিভি ক্যামেরায় এমন দৃশ্য দেখে অনেকেই বিস্মিত হন। সবাই আক্ষেপ করতে থাকেন, কেনো তাকে উঠানো হচ্ছে না এবং হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না।
শান্তর চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিক্যালে। কিন্তু এতো পরিমাণ গুলির স্পিন্টার তার পিঠেসহ শরীরে প্রবেশ করেছে যা অপারেশন করেও বের করা সম্ভব নয়। ডাক্তাররা বলেছেন, শান্ত বেঁচে থাকলেও তাকে সারা জীবন এইসব স্পিন্টারের যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মা আসমা বেগমের সঙ্গে থাকে শান্ত (১১) ও ছোট ভাই শাওন (৯)। তিনি নিজে একসময় ছাপাখানায় কাজ করলেও এখন মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুলের সামনে চায়ের দোকানদারি করেন। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে ফকিরাপুলের চেয়ারম্যান গলিতে খালার বাসায় বেড়াতে এসেছিল দুই ভাই। রূপগঞ্জের একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে শান্ত। ঘটনার দিন দুপুরে শান্ত ও শাওন খালার বাসা থেকে তার জন্য খাবার নিয়ে গিয়েছিল। খাওয়া শেষে টিফিন বাক্সটি নিয়ে বাসায় ফেরার পথে জামায়াত-শিবির ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায় শান্ত।
আর ওই ঘটনায় তার জীবনের কাল হয়ে দেখা দেয়। জীবনে বেঁচে গেলেও শান্তর বর্তমান পরিস্থিতিতে তার পরিবারবর্গ দিশেহারা। কিভাবে চিকিৎসা চালাবেন। আর এতটুকু কচি শিশুর জীবনে কি অন্ধকার নেমে আসবে সে চিন্তায় শঙ্কিত সবাই।
আর কত সাধারণ মানুষকে এদেশের রাজনীতির বলি হতে হবে সে প্রশ্ন সকলের।