ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে রেলসেতুটি ভেঙে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই রেলসেতুটি আবারও ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সীতাকুণ্ডের মাদামবিবিরহাট এলাকায় সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যাওয়া রেলসেতুটি সাময়িকভাবে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হলেও পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না করায় অতিবর্ষণে আবারও সেতুটি ভেঙে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবিরহাট নেভিগেট এলাকার পূর্ব পাশে অবস্থিত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ৩৪ নম্বর সেতুটি ২৬ জুন রাত ৮টার দিকে পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায়। এতে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরদিন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘটনাস্থলে এসে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে সেতুটি রেল চলাচলের উপযোগী করতে অন্তত ১৫ দিন লাগবে বলে সাংবাদিকদের জানান। এদিকে মন্ত্রীর ঘোষণার মাত্র একদিন পর ২৮ জুন দুপুর দেড়টা থেকেই একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চালাতে শুরু করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তড়িঘড়ি করে যেনতেনভাবে রেল চলাচল স্বাভাবিক করে কর্তৃপক্ষ। এদিকে আবহাওয়া অফিসসূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আরও কয়েকবার অতিমাত্রায় বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনার রয়েছে। আরেকবার অতিমাত্রার বর্ষণ হলে যেকোন মুহূর্তে এটি ভেঙে গিয়ে চলন্ত ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সমপ্রতি সরেজমিন সেতুটি পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ট্রেনলাইন দুটির পশ্চিম পাশের লাইনটি নিচে কোন খুঁটি না থাকায় শূন্যে ঝুলে রয়েছে। আর পূর্ব পাশের লাইনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে কোন রকম দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে সেতুসহ আশপাশের অন্তত ২০-২৫ গজ রেল লাইন খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় থাকলেও একটি লাইনকে কোনরকম দাঁড় করিয়ে তার উপর দিয়ে ট্রেন চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ট্রেন চললেও সেতুটির উভয় পাশেই বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সেতুটির উপরের লাইনগুলো মোটা দড়ি ও তার দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তবে ভগ্ন লাইনটি মেরামত করার লক্ষ্যে বিকল্প একটি অস্থায়ী লাইন করছে কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে সিনিয়র সাব স্টেশন ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন জানান, চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ চালু করতে পূর্ব পাশের লাইনটি সংস্কার করে আপাতত যাত্রীবাহী ট্রেন চালান হচ্ছে। তবে যে অবস্থায় আছে তাতে আবারও কোন ঢল হলে ব্রিজটি আবার ভেঙে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য বিকল্প একটি অস্থায়ী লাইনের কার্যক্রম চলছে। এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মতিলাল বড়ুয়া বলেন, এখন শুধু ডাউন লাইনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে।
এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে আশংকাযুক্ত এই সেতুটি মেরামত করা না হলে যেমন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি আবারও রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।