দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোটবেলায় ঘুম পাড়ানি গান বা গল্প আমরা সবাই শুনেছি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। এখন আমাদের নজর শুধু আরামের দিকে। আরাম যেভাবে হয় সেভাবেই শুয়ে পড়ি। কিন্তু শারীরিক সমস্যা থাকায় অনেকের ঘুমই আরামের হয় না। তাদের জন্যই আমাদের আজকের আয়োজন।
রাতে বিছানায় উঠেই আমরা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে শুয়ে পড়ি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোন প্রকার শারীরিক সমস্যা থাকলে যেনতেনভাবে শোয়া উচিত নয়। ভিন্ন ভিন্ন ঘুমানোর ভঙ্গির খারাপ ও ভালো দিক আছে। কার জন্য কোনটা প্রয়োজন তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
সাধারণ শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘুমানোর ভঙ্গির প্রতিক্রিয়া ও সমাধান দেওয়া হলঃ
নাক ডাকাঃ কারো যদি নাকডাকা(ঘুমানোর সময় শ্বাসক্রিয়ায় শব্দ হওয়া) সমস্যা থাকে তবে তার পাশে করে শোয়া উচিত। শ্বাসনালীতে বাধা পড়ার কারনেই মূলত এই সমস্যা হয়। পাশ করে ঘুমালে শ্বাসনালী খোলা থাকে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, চিত হয়ে ঘুমালে এই সমস্যা আরো প্রকট হয়। কেননা ঘুমানোর সময় ঘাড় ও গলার সবকিছু শিথিল থাকে। এতে জিহ্বার গোড়া পিছলে গলার মধ্যে চলে আসে। যা নিঃশ্বাস প্রশ্বাসে বাধার সৃষ্টি করে। কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করে চিত হয়ে শোয়া রোধ করা যায়। টি-শার্টের পিঠের দিকে পকেট সেলাই করে তাতে একটি টেনিস বল রাখা যায়। এটি চিত হয়ে শোয়া রোধ করতে একটি কার্যকর উপায়। এছাড়া বালিশ পাকিয়ে কিংবা আলিঙ্গন করে ঘুমালে তা চিত হয়ে শোয়া রোধ করতে সাহায্য করে।
ঘাড়, কাঁধ ও পিঠে ব্যথাঃ ঘাড়ে ব্যথা থাকলে উপুড় হয়ে না শোয়া ভালো। এটা ঘাড়কে টানটান করে রাখবে। তাই এক্ষেত্রে পাশ করে বা চিত হয়ে শোয়া উত্তম। এতে ঘাড় এবং মেরুদণ্ড সঠিক অবস্থানে থাকে।
ঘাড়ে ব্যথা থাকলে পাশ করে শোয়া উচিত নয়। এতে ব্যথা বেড়ে যায়। বাড়তি চাপ ব্যথা বাড়িয়ে দেয় এবং ঘুম নষ্ট করে দেয়।
পিঠে ব্যথা থাকলে চিত হয়ে শোয়া ভালো। এতে মেরুদণ্ড নিরপেক্ষ ভাবে অবস্থান করে। হাঁটুর নিচে একটি বালিশ দিয়ে পা দুটো সোজা করে সমান্তরাল রাখলে কোমর ও পিঠ থেকে চাপ কমে যায়। এতে কোমর আর পিঠের নড়াচড়াও কম হয়। আপনি যদি পাশ ফিরে শুতে পছন্দ করেন তবে একটি বালিশ পায়ের হাঁটুর মাঝে দিবেন, যাতে পা দুটো কিছুটা ফাঁক হয়ে থাকে। এটা মেরুদণ্ড টানটান হওয়া রোধ করে ব্যথা কমাবে।
এসিডিটিঃ এই সমস্যা আরো প্রকট হয় যখন আপনি সমান্তরালে চিত হয়ে ঘুমাবেন। এমনভাবে শুতে হবে যাতে শরীরের উপরের অংশ সামান্য উপরে থাকে। এর জন্য পিঠ কিংবা ঘাড়ের নিচে একটা বালিশ দেওয়া যায়। যাতে বুক ও পাকস্থলি অপেক্ষা মাথা উপরের দিকে থাকে। এতে অভিকর্ষজ বলের জন্য পাকস্থলির এসিড নিচের দিকে চলে যায়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, শরীরের উপরের অংশ ৪ ইঞ্চি উঁচু করে ঘুমালে এসিডিটি আগের চেয়ে কম হয়।
নিজ নিজ সমস্যা বুঝে কয়েকদিন সচেতন থেকে অনুশীলন করুন। অভ্যাস হয়ে যাবে। এতে ভালো ঘুম হবে। শরীরের ত্রুটি গুলোও অনেকটা দূর হবে। চমৎকার একটা ঘুম শরীরের জন্য খুবই জরুরী।
সূত্রঃ নিউজম্যাক্স