ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নন্দিত কথাসাহিত্যিক হূমায়ূন আহমদের মরদেহ আগামীকাল ২৩ জুলাই সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। পরদিন মঙ্গলবার ২৪ জুলাই তাঁর নিজের গড়া নুহাশ পল্লীতে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ আগামীকাল ২৩ জুলাই সকালে ঢাকায় পৌঁছবে। এমিরেটস এয়ারলাইন্সে তার মরদেহ ঢাকায় আনার সব ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। এরপর তার নামাজে জানাজা জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে। তার মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। তার ছোট ভাই ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবিব জানান, হুমায়ূন আহমেদের নিজের হাতে গড়া নুহাশ পল্লীতে মঙ্গলবার ২৪ জুলাই সকালে তার মরদেহ সমাহিত করা হবে।
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এমএ মোমেন নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের জানান, হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ ও স্বজনদের ফেরার ব্যবস্থা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। শুক্রবার ২০ জুলাই জুমার নামাজের পর নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে হুমায়ূন আহমেদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন।
জানা গেছে, এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৭৭ এয়ারক্রাফটের ইকে-৫৮২ ফ্লাইটে হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ ঢাকায় আনার সব ব্যবস্থা ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সোমবার ২৩ জুলাই সকাল ৯টায় ঢাকায় পৌঁছবে তার মরদেহ। নিউইয়র্ক থেকে ফ্লাইটটি দুবাই হয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে। নিউইয়র্ক সময় শনিবার ২১ জুলাই রাত ১১টা ২০ মিনিটে এমিরেটসের ফ্লাইট (নম্বর-২০৩) হুমায়ূনের কফিন নিয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেবে। দুবাই পৌঁছার পর অপর একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮২) তার মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। একই বিমানে দেশে ফিরছেন হুমায়ূনের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিত, ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক, প্রকাশক ও বন্ধু মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, মরদেহসহ লেখকের ঘনিষ্ঠজনদের টিকিটের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ সরকার। বিষয়টি তদারকি করছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন।
এদিকে হুমায়ূন আহমেদের মহদেহ যথাযোগ্য মর্যাদায় গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ বিমানের কার্গো কমপ্লেক্স, কাস্টমস বিভাগসহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। হুমায়ূনের কফিনটি যাতে দ্রুত বিমানবন্দর থেকে বের করে আনা যায় সে জন্য বিমানের শীর্ষ পর্যায় থেকে ওইদিন কার্গো কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমিরেটসের ফ্লাইটটি শাহজালালে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে লাশ রাখার বিশেষ গাড়িতে করে মরদেহ কার্গো কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হবে। এরপর মরদেহ কিছু সময়ের জন্য রাখা হবে কার্গো কমপ্লেক্সের হিমাগারে।
জানা গেছে, সোমবার ২৩ জুলাই বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত রাখা হবে জাতীয় শহীদ মিনারে। এরপর নামাজে জানাজার জন্য তার মরদেহ বেলা আড়াইটায় জাতীয় ঈদগাহে নেয়া হবে। রাতে বারডেমের হিমঘরে মরদেহ রাখা হবে। মঙ্গলবার ২৪ জুলাই সকাল ৮টায় মরদেহ নুহাশ পল্লীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তার মরদেহ দাফন করা হবে।
দাফন নুহাশ পল্লীতেই শেষ ঠিকানা
ঈপ্সিত ‘চান্নিপসর রাইতে’ মৃত্যু না হলেও ‘দুধের চাদর গায়ে’ জড়িয়েই না ফেরার দেশে বসত গড়বেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। নিজের স্বপ্নের জগত গাজীপুরের ‘নুহাশ পল্লীতে’ তার মরদেহ সমাহিত করা হবে। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী নুহাশ পল্লীর লিচু গাছের নিচে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে বলে জানা গেছে।