দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছাত্র রাজনীতি এদেশের অনেক বড় আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে নব্বুইয়ের গণ আন্দোলনেও ছাত্রদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু সামপ্রতিক সময়ে ছাত্র রাজনীতি এতো নোংড়া পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গেছে যে ছাত্র রাজনীতির ভবিষ্যত নিয়ে সকলেই সংকিত।
কালের বিবর্তনে এই ছাত্র রাজনীতি হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের দেশ থেকে। এখন ছাত্র রাজনীতি মানেই হল দখল আর ক্ষমতার দাপট দেখানো। এমনই ঘটনা দেখা গেলো রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ে। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিকে আবারও কলুষিত করা হলো। কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন এমন অবস্থা আর কত দিন?
এদেশের ছাত্র রাজনীতির কারণে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল। আমরা অর্জন করেছিল মাতৃভাষার স্বীকৃতি। এমনভাবে একাত্তর, পরবর্তী সময়ে নব্বুয়ের গণঅভুত্থান সবই হয়েছিল ছাত্র রাজনীতির বদৌলতে। কিন্তু এখন যে রাজনীতি হচ্ছে সেটিকে কোনওভাবেই রাজনীতি বলা যাবে না।
সরকার গঠনের একমাস পার না হতেই নতুন বিতর্কের জন্ম দিলো শত সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগ নামক এই সংগঠনটির ‘নামধারী সন্ত্রাসীরা’। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করার ঘটনা এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। অবশ্য ওই দুই ‘ছাত্র নামধারী’কে বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে।
এদিকে সহযোগী সংগঠনের এমন আচরণে বিব্রত অবস্থায় পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অনেকেই প্রশ্ন করেন, ছাত্রলীগ আসলে কে চালায়? কার জোরে সর্বোচ্চ হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে বারবার সন্ত্রাসী আচরণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ছাত্রলীগের পরিচয়ধারী কতিপয় সন্ত্রাসীরা? এমন এক অবস্থায় অনেকেই বলছেন, ছাত্রলীগ এখন সরকারের গলার কাঁটা’য় পরিণত হয়েছে। এখন এই কাঁটাকে উপড়ে ফেলতে না পারলে হয়তো এই ছাত্রলীগই এক সময় সরকারের ব্যর্থতার মূল কারণ হিসেবে দেখা দেবে।
রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ে যা ঘটে গেলো তা যেনো আর কোথাও না ঘটে সেদিকে কঠোরভাবে নজর দেওয়া জরুরি। কারণ এমনিতেই সরকারের সামনে রয়েছে বিএনপিসহ নানা আন্দোলনের হুমকি। তারপর যদি ঘরের শত্রু হয়ে পড়ে বিভিশন তাহলে তো সরকারের এই সময়টা পার করা বড়ই কঠিন হয়ে পড়বে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এখনই সরকারকে কঠোরভাবে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমন করতে হবে। বিশ্বজিতের মতো আস্ফালনের যেনো আর কোন সুযোগ কেও না পায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দেওয়া সরকারের জন্য অত্যন্ত একটি জরুরি বিষয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।