দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দরজায় কড়া নাড়ছে বসন্ত ও ভ্যালেন্টাইনস ডে। ভ্যালেনটাইনস ডে মানে ভালবাসা দিবস। ভালবাসা দেওয়ার বা গ্রহন করার এক বিশেষ দিন এই ১৪ ফেব্রুয়ারি। ভালবাসার মানুষদের জন্য প্রতিটি দিন, এমনকি প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। তবুও এই দিনটির গুরুত্ব যেন অন্য রকম। এ দিনটিকে সবাই স্মরণীয় করে রাখতে চায়। সময় কাটাতে চায় প্রিয়জনের সাথে।
এই দিনে প্রিয়জনের সাথে বের হওয়ার আগে যেটা প্রয়োজন সেটা হল ভ্যালেনটাইনস ডে’র পোশাক। অবশ্য ভ্যালেনটাইনস ডে’র নির্দিষ্ট কোন পোশাক নাই। তবে এই দিনটি উপলক্ষে ফ্যাশন হাউসগুলো ভিন্নমাত্রার পোশাক নিয়ে আসে। এসব পোশাকের মধ্যে রয়েছে সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট প্রভৃতি। পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, তাঁত, ভয়েল, নিপ, মসলিন, এন্ডিসহ নানা ধরনের আরামদায়ক কাপড়। রঙের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে লাল, গোলাপি, নীল, হলুদ, টিয়া, সাদা, কমলা, কালো, সবুজ, আকাশি প্রভৃতি। পোশাকে কাজ করা হয়েছে এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, ব্লক, হাতের কাজ, হ্যান্ডপেইন্ট, টাইডাই প্রভৃতি। বসন্তকে সামনে রেখেও তৈরি করা হয়েছে সব ধরনের পোশাক।
পছন্দের মানুষের পছন্দ মত পোশাক পরে এই দিনটিতে সবাই চান পছন্দের মানুষের সাথে সময় কাটাতে৷ এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর সহ বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন৷
একুশে বইমেলা:
ঢাকায় এ মুহুর্তে চলছে অমর একুশে বইমেলা৷ ভালোবাসা দিবসের ছোঁয়া থাকে এই বই মেলাতেও৷ প্রিয়জনকে নিয়ে এই বই মেলায় পার করা যায় কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত। একইসাথে পছন্দের মানুষটিকে দেওয়া যায় তার পছন্দের বই।
বোটানিক্যাল গার্ডেন:
যাওয়া যায় বোটানিক্যাল গার্ডেনে। মিরপুরের চিড়িয়াখানা আর বোটানিক্যাল গার্ডেন পাশাপাশি অবস্থিত। বিশাল জায়গা নিয়ে অবস্থিত এই গার্ডেনে ৮২.৯ হেক্টর অংশে আছে শুধু গাছপালা। আরো আছে পুকুর, খাল ও সরু রাস্তা। সরু রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে গোলাপ বাগান, রাস্তার পাশে আকাশমনি, শাপলা-পুকুর, বাঁশঝাড়, পদ্মপুকুর, ইউক্যালিপটাসের বাগান, গ্রিনহাউজ, ক্যাকটাসঘর ও গোলাপ বাগান।
ধানমন্ডি লেক:
এছাড়াও যাওয়া যায় ধানমন্ডি লেকে। এই লেকটি সারা ধানমন্ডি এলাকা ঘুরিয়ে- পেঁচিয়ে প্রায় ১০ কি.মি পর্যন্ত চলে গেছে। ৫০মিটার চওড়া এই লেকটির গভীরতা ৮ থেকে ৯ মিটার পর্যন্ত। এর বিভিন্ন অংশের উপরে রয়েছে সেতু পারাপারের জন্য, রয়েছে পথচারি বসে বিশ্রামের জন্য বসার ব্যবস্থাও। ৮নং সেতুর কাছে রয়েছে ডিঙ্গি নামক একটি ক্যাফে।
গুলশান লেক পার্ক:
যাওয়া যায় গুলশান লেক পার্কে। গুলশানের লেকের পাড় ছুয়ে এটি বিস্তৃত। ২.৪১ হেক্টর জায়গা নিয়ে এর আধিপত্ত।
রমনা পার্ক:
এসব ছাড়াও যাওয়া যায় রমনা পার্কে। শিশু পার্কের উল্টো পাশেই এই রমনা পার্ক অবস্থিত। এটি প্রতি দিন খোলা থাকে, কোনো প্রবেশ মূল্য নেই। এর ভিতরে আছে চমৎকার খাল, সরু পায়েচলার রাস্তা, অসংখ্য গাছ আর সবুজ ঘাসের লন। এর ভেতরে আছে চাইনিজ রেস্তোরা যেখানে প্রিয়জনকে নিয়ে পার করা যাবে অসাধারণ কিছু মুহূর্ত। পুরানো হাইকোর্ট ভবন থেকে বর্তমান সড়ক ভবন পর্যন্ত মোঘলরা বাগান তৈরী করেছিলেন। বর্তমানে রমনা পার্কে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। রমনার বটমুলে ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন অনেক জনপ্রিয়।
এ দিনে প্রিয়জনকে অথবা পছন্দের মানুষটিকে মনের মত কিছু দেওয়া যেন একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সবাই চায় এই দিনে তার প্রিয়জনকে পছন্দের কিছু দিতে। সাধারণত ছেলেরা চায় তাদের প্রিয়জনকে খুশি করার মত কিছু দিতে। কিন্তু কি দিবেন তা নিয়ে অনেক সময় দেখা দেয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। রুচি ভেদে বিভিন্নজন বিভিন্ন ধরণের উপহার দিতে চান।
কেউ কেউ তো গহীন রাতে ফুল দেওয়ার মাধ্যমে পছন্দের মানুষটিকে ভালবাসা জানিয়ে থাকেন। এই দিনে প্রিয়জনকে দেওয়া যায় ভ্যালেনটাইনস ডে কার্ড। বর্তমানে আধুনিক সব সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত প্রসারে কার্ড উপহার দেয়াটা অনেকেই সেকেলে ভাবতে পারে। তবে কার্ড পাঠানো কেবল স্ট্যাম্প সাঁটা ও খামে পুরে দু’তিন দিন আগে পোস্ট করে দেয়াই নয়, এর মাধ্যমে বোঝা যায় ভালবাসার আন্তরিকতা।
এছাড়াও দেওয়া যায় ব্রেসলেট, রিং, এয়ার রিং, পায়েল, পার্স, জুয়েলারি বক্স, পোশাক, সিডি, পুতুল, সানগ্লাস, ডায়েরি, মুঠোফোন, নোট বুক, প্রেমের কাব্য উপন্যাস। এছাড়াও দেওয়া যায় বিভিন্ন আকার আর ডিজাইনের পুতুল, মগ, গয়না, কার্ড, শুকনো ফুল, ফটোফ্রেম, ঘড়ি, কাপল মগ, হ্যান্ড ব্যাগ, মিউজিক্যাল হার্ট ইত্যাদি।
ভালোবাসার অনুভূতিই তো সবচেয়ে বড়। তবে এর প্রকাশটাও থাকা চাই। বিশেষ দিনে প্রিয়জনকে ছোট্ট একটি উপহার, শুভেচ্ছা কার্ড আর ফুল দিয়ে নতুন করে ‘তোমায় বড় ভালোবাসি’ বলে ভালোবাসার মানুষটিকে ভালোবাসার রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই নিজেদের ভালবাসা আর গভীর করার মধ্যেই এই দিনের সার্থকতা নিহিত।