দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যখন-তখন সিম কিনলেই সঙ্গে সঙ্গে চালুর রেওয়াজ থাকছে না। নতুন সিম কিনলে গ্রাহকের দেওয়া তথ্য যাচাইয়ের পরে সেই সিম চালু হবে।
জানা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইচ্ছে মতো সিম বিক্রি করে নামে-বেনামে যাতে সিম ব্যবহার করা না হয় সে জন্যই সিম কেনায় রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। ইতিপূর্বে সিম কিনে মোবাইলে ভরলেই তা একটিভ হতো। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহকের দেয়া তথ্য যাচাই করে তবেই তা চালু করবে মোবাইল কোম্পানি। যাতে কেও ভুয়া নামে সিম কিনে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্যেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগামী ১ মার্চ থেকে নতুন এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে বলে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন থেকে গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
বিটিআরসির নির্দেশে বলা হয়েছে, দেশে ‘প্রি-অ্যাকটিভ সিম’ (আগে থেকেই চালু) বিক্রি নিষিদ্ধ। ২০১২ সালের ১২ অক্টোবরে ওই নির্দেশিকায় বলা আছে, গ্রাহক পরিচয় নিশ্চিত করার পরেই অপারেটররা সিম অ্যাকটিভ করতে পারবে। সিম নেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি কিংবা পাসপোর্টের কপি অথবা অন্য কোনো প্রামাণ্য সরকারি নথি জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে।
কিন্তু বিটিআরসির ওইসব নির্দেশিকা বেশির ভাগ সময় মেনে চলা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। পাড়া-মহল্লার দোকানে, এমনকি ফুটপাতেও বিভিন্ন অপারেটরের কাছে সিম পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা নেয়া হলেও অনেক দোকানে এগুলো নেওয়া হয় না অথবা নিলেও কোম্পানির কাছে জমা দেওয়া হয় না এমন অভিযোগও রয়েছে।
আবার জমা দেয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এমনও দেখা গেছে, অনেকেই নকল জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি বা নথি জমা দিয়ে সিম নিচ্ছে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাও সিম সহজে বিক্রির লোভে জাল কাগজপত্র বানিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক সময় দোকানীকে নকল পরিচয়পত্র দিলেও দোকানীর কিছুই করার থাকে না। কারণ আসল নকল চেনার ক্ষমতা তাদের নেই। নির্বাচন কমিশনে গিয়ে যাচাই করার মতো সময় তাদের নেই।
অথচ এক শ্রেণীর সন্ত্রাসীরা এই সমস্ত সিম ব্যবহার করে সমাজবিরোধীরা তাদের সাম্রাজ্য চালিয়ে থাকে। কিন্তু ভুয়া তথ্য থাকায় অপরাধীকে চিহ্নিত করাও সম্ভব হয় না আইনপ্রয়োজকারী সংস্থার পক্ষে। তবে বিটিআরসির নতুন এই নির্দেশিকা চালু হলে এইসব সমস্যার সমাধান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে কারণে বিটিআরসি কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে সিম বিক্রির জন্য মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ আগামী ১ মার্চ থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিটিআরসি ইতিপূর্বেও সিম বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছিল। কিন্তু প্রথম কিছুদিন কোম্পানীগুলো তা মানলেও ক’দিন যেতে না যেতেই আবার একই অবস্থায় উপনিত হয়।