বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সামপ্রতিক সময়ে দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা যখন হিন্দু সমপ্রদায়কে চিন্তিত করেছে ঠিক তখন ঈশ্বরদীর সাড়া ইউনিয়নের সুধান্য পাল একটু মাথা গোজার ঠাই পেয়ে বড়ই খুশি।
নদী ভাঙ্গনের কারণে সহায় সম্বলহীন সাঁড়ার শত শত লোক মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। নদী ভাঙ্গনে তাদের সবকিছু গেছে। ঘর-বাড়ি, জমি-জিরাত যা ছিল সবই চলে গেছে নদী ভাঙ্গনে। পদ্মার ভাঙ্গন তাদের নি:স্ব করেছে। আজ তারা যাযাবরের মতো মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়ান।
এমন এক পরিস্থিতিতে ১ মার্চ সাঁড়ার ৩২টি পরিবারকে এক বাঁধ ঢেউটিন ও টিনদিয়ে বাঁশ কিনে ঘর বানানোর জন্য ৩ হাজার টাকা দিলেন ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি। মন্ত্রীর হাত থেকে টিন পেয়ে তাদেরই একজন সুধান্য পাল বড়ই খুশি।
সুধান্য এখন আড়মবাড়িয়াতে মৃতশিল্পের একটি কারখানায় কাজ করেন। মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেন তিনি। বাবা অধীর চন্দ্র পাল অনেক আগেই ভারতে চলে গেছেন। মাটির টানে সুধান্য এখনও রয়ে গেছেন এদেশে। ২০০৯ সালে পদ্মার ভাঙ্গন তাদের পথে বসিয়েছে। এখন মানুষের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ভূমি মন্ত্রীর কাছ থেকে টিন ও টাকা পেয়ে তিনি জানালেন, কোন রকমে নদীর কোন একধারে ঘর তুলে বসবাস শুরু করবেন। ২ ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে এভাবেই কেটে যাবে তার বাকি জীবন। ভারতে চলে যাবেন কিনা সে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমার বাবা গেছে তবে আমি বাংলাদেশের মাটিকে ভালবাসি। তা নাহলে ২০০৯ সালের পর থেকে আমি সম্বলহীন। তারপরও যায়নি বাংলাদেশ ছেড়ে। বাংলাদেশ আমার প্রাণ। বাকি জীবনটা এখানেই কাটাতে চায়।
উল্লেখ্য, এসময় ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু পদ্মায় চিতল মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। উপজেলা মৎস্য অফিস, সাঁড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ও আশরাফ ডুবুরীর তত্ত্বাবধানে এই মৎস্য অভয়াশ্রম প্রকল্পের আয়োজন করা হয়।