দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমানটির সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষের ছবি প্রকাশ করেছে চীন। চীনা এক রাষ্ট্রীয় ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এসব স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যায় দক্ষিণ চীন সাগরের বুকে ধোঁয়া এবং বিধ্বস্ত কিছু একটা ভাসছে।
বিবিসি জানায় চীনের বিজ্ঞান বিষয়ক রাষ্ট্রীয় ওয়েবসাইটে গত ৯ তারিখ সকাল ১১ টার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরের বুকে বিধ্বস্ত কিছু একটা ভাসতে থাকার ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর নিখোঁজ মালয়েশিয়ান বিমানের বিষয়ে অনুসন্ধান আরোও জোরদার করা হয়েছে।
চীনা স্যাটেলাইটে ধরা পড়া এই ছবি সমূহ বড় করে দেখলে দেখা যায় সাগরের বুকে ধোঁয়া এবং সেখানে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কিছু অংশ ভাসছে। এতদিন সম্ভাব্য যেসব জায়গায় অনুসন্ধান চালানো হয়েছে তার প্রেক্ষিতে স্যাটেলাইটে দেখা যাওয়া দক্ষিণ চীন সাগরের স্থানটি সম্পূর্ণ আলাদা এক জায়গায় হওয়ায় অনুসন্ধানকারীরা আবার নতুন ভাবে ঐ স্থানে অনুসন্ধান চলাতে যাচ্ছেন।
এদিকে চীনের বেসামরিক বিমান পরিবহনের প্রধান লি জিয়াকজিয়াং স্যাটেলাইটের ছবির বিষয়ে বলেন, “আমাদের স্যাটেলাইটে ধরা পড়া এসব ছবির মাঝে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, দক্ষিণ চীন সাগরে কিছু একটা বিধ্বস্ত হয়েছ। তবে আমরা এখনও নিশ্চিত নই এটা কি আদৌ নিখোঁজ মালয়েশিয়ান বিমান কিনা।”
এ ঘটনার পরে দক্ষিণ চীন সাগরের উপকূলে অবস্থিত দেশ ভিয়েতনাম তাদের আন্তর্জাতিক তল্লাশি অভিযান আবার শুরু করেছে। এর আগে বুধবার সকাল থেকে তারা তাদের বিমানে অনুসন্ধান কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেছিল। এ বিষয়ে ভিয়েতনামের উপপরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু যায়গায় অনুসন্ধান চালিয়েছি। তবে উল্লেখিত স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশের পরে আমরা নতুন করে ঐ এলাকায় অনুসন্ধানের জন্য টিম পাঠিয়েছি।’
এদিকে নিখোঁজ বিমান নিয়ে চলছে বিভ্রান্তিকর নানান তদন্ত, বিমানটির শেষ মুহূর্তের যোগাযোগ বিষয়ে মালয়েশিয়ার দুই সংস্থার রাডার আলাদা আলাদা কথা বলছে। বিমানের সাথে শেষ যোগাযোগের বিষয়ে মালয়েশিয়ান বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছিল তারা বিমানের সাথে শেষ যোগাযোগ করেছিল যখন বিমানটি মালয়েশিয়া এবং ভিয়েতনামের আকাশসীমা অতিক্রম করছিল তখন। বিমানের বিষয়ে মালয়েশিয়ান নিয়ন্ত্রণ সংস্থার শেষ রেকর্ডে বলা হয়েছে, “মালয়েশিয়ান ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০ মালয়েশিয়ান নিয়ন্ত্রণ থেকে এই মাত্র Ho Chi Minh City বিমান নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নিকট স্থানান্তর করা হলো।’ অপর দিকে এর পরেও মালয়েশিয়ান বিমান বাহিনীর রাডারে বিমানটিকে নিজের গন্তব্যের পথ থেকে আরো বেশ কয়েক’শ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে দেখতে পেয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের স্বজনরা জানাচ্ছে বিমান নিখোঁজ হওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পরেও যাত্রীদের মোবাইলফোনে রিং হয়েছে, যা সাগরের বুকে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এ ধরণের রাডার বিভ্রান্তি এবং তথ্য মূলত বিমান নিখোঁজের তদন্তে বিভ্রন্তি ছড়াচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গ্যালারীতে দেখুনঃ
মালয়েশিয়ান ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ বাস্তবিক পক্ষে ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে কোথায় নিখোঁজ হয়েছে তা সম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাসে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর এবং রহস্য জনক ঘটনায় রূপ নিয়েছে। এরই মাঝে সারা বিশ্ব থেকে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম, আমেরিকা সহ অনেক দেশ এই তদন্ত প্রক্রিয়ার সাথে নিজেদের জড়িয়েছে, তবে এখনও বিমান নিখোঁজ রহস্যের কোন সমাধান করা সম্ভব হয়নি।
অনুসন্ধানী ভিডিও