ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নির্বাচন নিয়ে আবারও বিতর্ক। যেখানে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। সেখানে এই নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে। কাপাসিয়া উপ-নির্বাচনে ভাতিজি সিমিন হোসেন রিমির প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন চাচা আফসারউদ্দীন আহমেদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সবাইকে রিমির পক্ষে কাজ করতে বললেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-৪ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নেবেন আফসারউদ্দীন।
সোমবার ২৭ আগস্ট রাতে আফসারউদ্দীন আহমেদ বলেন, “মাঠে আছি থাকবো। কাপাসিয়ার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমি নির্বাচনে অংশ নেবো।”
২৭ আগস্ট বিকেলে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে গণভবনে বৈঠককালে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সিমিন হোসেন রিমির হাতে দলীয় মনোনয়ন তুলে দেন। এ সময় তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রিমির পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “কাপাসিয়ার মাটি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের স্মৃতিবিজড়িত। তার স্মৃতি ধরে রাখতে সবাইকে রিমির পক্ষে কাজ করে তাকে নির্বাচিত করতে হবে।”
দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে ২৭ আগস্ট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সাবেক মন্ত্রী এবং তাজউদ্দিন আহেমেদের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট আফসারউদ্দিন আহমেদ। কাপাসিয়া উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের পক্ষে গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, ২৭ আগস্ট সিমিন হোসেন রিমির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন দীপক মজুমদার খোকন, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন আহমেদ খানের পক্ষে মনোনয়নপত্র নেন কুতুবুল আলম। এদিকে একই পরিবারের থেকে একই আসনে উপ-নির্বাচনে চাচা-ভাতিজির অংশ নেয়ার বিষয়টি ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে এলাকায়। খবর বাংলাদেশনিউজ২৪ডটকমের।
কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২৭ আগস্ট দু’দফায় রিমি এবং আফসারউদ্দীসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। দুপুরে সিমিন হোসেন রিমির বাসায় এবং সন্ধ্যা সাতটায় বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক চলে। ওই সূত্র জানায়, রাত ৯টা পর্যন্ত চলা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মেহেদী।
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক গণভবন থেকে বৈঠক শেষে বেরিয়ে জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী বৈঠকে থাকলেও আফসারউদ্দীনকে দেখা যায়নি।
বিদ্রোহী প্রার্থী আফসার উদ্দিন উপ-নির্বাচনে ‘রিমির পক্ষে কাজ করবেন’ জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, “আশা করি পারিবারিকভাবে তারা এ সমস্যার সমাধান করবেন।”
অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন আহমেদ খান আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ১৯৮৯ সালে কাপাসিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান, ১৯৯৬ সালে এ আসনে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। নয় মাসের মাথায় ভাষাণটেক বস্তি উচ্ছেদের ঘটনায় তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তবে শেষ মুহূর্তে হলেও আফসার উদ্দিন আহমেদ খান সরে দাঁড়াবেন বলে দলীয় একটি সূত্র আভাস দিয়েছে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানজিম আহমদ সোহেল তাজ ২০০১ ও ২০০৮ সালে গাজীপুর-৪ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ বছরের ৭ জুলাই সোহেল তাজ পদত্যাগ করলে এ আসনটি শূন্য হয়।
নির্বাচন কমিশন গত ২৩ আগস্ট এ আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপ-নির্বাচন বর্জন করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। প্রথমে একক প্রার্থী দেওয়ার কথা বললেও পরে একক কোনো প্রার্থী দেয়নি মহাজোটের অন্যতম শরীক দল জাতীয় পার্টি।