ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আবারো আসছে বলে জানা গেছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকেই বাড়তে পারে বিদ্যুতের খুচরা ও পাইকারী মূল্য। এ ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেনের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা ২৮ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক ও বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিস্তারিত আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী যৌক্তিক হারে ও সহনীয় ধাপে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন করেন। এ সময় তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ বিলের স্ল্যাব (ধাপ বা শ্রেণী) সুবিধা প্রত্যাহারের ফলে সৃষ্ট জনঅসন্তোষের বিষয়টি উল্লেখ করে অবিলম্বে বিষয়টিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এ পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পর যেন জনমনে নতুন করে অসন্তোষ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সূত্রটি জানায়, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী এ পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে আগামী মাসের (সেপ্টেম্বর, ২০১২) প্রথমার্ধে যে কোনো দিন। তবে ঘোষণা যখনই দেয়া হোক না কেন, বর্ধিত নতুন মূল্য কার্যকর হবে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমদিন থেকেই। এর ফলে অক্টোবর মাসে গিয়ে গ্রাহকদেরকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ বাড়তি টাকা গুণতে হবে। এর আগে গত ২৯ মার্চ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়া হলেও তা কার্যকর করা হয় ১ মার্চ থেকে। একই সূত্র জানায়, এ পর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে স্ল্যাব বা ধাপওয়ারী মূল্য কত হবে, সেটা এখনো ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিইআরসি কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে প্রচলিত সর্বনিম্ন ধাপ বা স্ল্যাব সুবিধা বাতিল করে দেয়। সে কারণে মার্চ মাসে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে অস্বাভাবিক বিল আসতে শুরু করে। ওই অবস্থায় মার্চেই আরেক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে এপ্রিল মাসে বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে মারাত্মক অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ বিল নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হয় গ্রাহকদের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর থাকা স্ল্যাব সুবিধা প্রত্যাহারের ফলে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রধানত মধ্যবিত্ত গ্রাহকরা মারাত্মক চাপের মধ্যে পড়েন। বিষয়টি জনমনে নিরবে অসন্তোষের জন্ম দিতে থাকে। সমপ্রতি একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয় সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে। ওই গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়, এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা না নেয়া হলে যে কোন সময় বিষয়টিকে ঘিরে গণবিস্ফোরণ ঘটতে পারে।