দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খুনের সাথে জড়িতদের তর্কে তর্কে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার কৌশল্যারবাগ গ্রামের নূরনাহার নামে এক গৃহবধূ হত্যা এবং লাশ পুঁতে রাখার ঘটনা ১৪ বছর পরে প্রকাশিত হয়েছে।
আজ থেকে ১৪ বছর আগে নোয়াখালীর কৌশল্যারবাগ গ্রামের নূরনাহার নামের এক মহিলাকে হত্যা করে একই গ্রামের দুই মহিলা শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৭০) ও পুত্রবধূ শামসুন নাহার বেগম (৪৮)। নূরনাহার বেগম ২০০০ সালে নিজের কিছু জমি বিক্রি করে শামসুননাহার বেগম ও তার স্বামী নূরুল আমিন এর নিকট কিছু টাকা দাদন (ধার) দেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই টাকা ফেরত চাইলে নূরনাহার বেগমকে শামসুননাহার বেগম, নুরুল আমিন এবং মনোয়ারা বেগম মিলে হত্যা করে পেছনের জমিতে লাশ পুঁতে রাখেন।
তবে ঘটনার ১৪ বছর পরে সম্প্রতি শামসুননাহার তার জায়গা ও পারিবারিক বিষয়ে তার শাশুড়ি মনোয়ারা এবং দেবর বউ আসমা আক্তারের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। ঝগড়ার এক পর্যায়ে তর্ক করতে করতে হঠাৎ করেই নূরনাহারকে হত্যা বিষয়টি বলে ফেলেন শামসুননাহার। এতে দেবর বউ আসমা আক্তার বিষয়টি জানতে পেরে থানায় যেয়ে পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্তে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অভিযুক্তরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে লাশ কোথায় পুঁতে রাখা হয়েছে তা দেখিয়ে দেয়।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, নিহত নূরনাহার বেগম স্থানীয় কৌশল্যারবাগ গ্রামের জমাদার বাড়ির আলি হোসেনের স্ত্রী ছয় সন্তানের জননী ছিলেন। তার বাবার বাড়ির কিছু সম্পত্তি তিনি বিক্রি করে সেখান থেকে পাওয়া অর্থ তিনি গ্রামের কিছু মানুষকে দাদন হিসেবে দেন যার মাঝে ২ লাখ ৩০হাজার টাকা শামসুননাহার বেগম ও তার স্বামী নূরুল আমিনকে ৩০ মন ধানের বিপরীতে দেন। তবে নির্দিষ্ট সময় শেষে পাওনা অর্থ ফেরত চাইলেই ঝামেলা শুরু হয়। শামসুননাহার বেগম ও তার স্বামী নূরুল আমিন পাওনা অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং পাওনাদার নূরনাহার বেগমকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। এর কিছুদিন পরেই নূরনাহার বেগম নিখোঁজ হয়ে যান। নূরনাহার বেগমের পরিবার একে ভৌতিক বিষয় ভেবে থানায় মামলা করেনি।
এদিকে পুলিশ ইতোমধ্যে লাশ উদ্ধারের জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছেন, নূরনাহার বেগমের বড় ছেলে মাকে হত্যার দায়ে মামলা করেছেন। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সামাদ জানান, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। পরে তারা লাশ পুঁতে রাখার স্থানটি দেখিয়ে দেয়।”