দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কত কাহিনী আমরা পত্র-পত্রিকায় পড়ি। আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো একটি ডাকঘরের কাহিনী। একটি দোকান ঘরে পরিচালিত হচ্ছে এই ডাকঘরটি!
বাহুবল ও চুনারুঘাট উপজেলার সীমান্তঘেঁষা সাটিয়াজুরী ডাকঘরটির করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। জরাজীর্ণ একটি দোকান ঘরে পরিচালিত হচ্ছে অফিসিয়াল কার্যক্রম। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। জানা যায়, স্বাধীনতার আগে চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুরী গ্রামের এক বাড়িতে এবং স্বাধীনতার পর বাহুবল উপজেলার চিচিরকোট গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকঘরটির কার্যক্রম পরিচালিত হতো। বর্তমানে সাটিয়াজুরী বাজারের একটি মার্কেটের রাজ্জাক স্টোর নামের দোকান ঘরে পরিচালিত হচ্ছে ডাকঘরটির কার্যক্রম। এ ব্যাপারে সাটিয়াজুরী ডাকঘরের পোস্টমাস্টার আবদুল কাইয়ুম জানান, দুই উপজেলার ৪২টি গ্রাম নিয়ে এই ডাকঘরের সীমানা অবস্থিত। এলাকাবাসীর চিঠিপত্র ও টাকা পয়সা আদান প্রদানে এ ডাকঘরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তাছাড়া সরকারও রাজস্ব আয় করছে হাজার হাজার টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একটি পান-সিগারেটের দোকানে ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন কর্তব্যরতরা। পোস্টমাস্টার নিজের পকেটের মাসিক ৪শ’ টাকায় রুমটি নেন। ডাকঘর স্থাপনের কয়েকযুগ পার হলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কোন অনুদানে নির্মিত হয়নি ডাকঘরের কোন ভবন। তবুও আবদুল কাইয়ুমের চেষ্টায় থেমে থাকেনি ডাকঘরের কার্যক্রম। অবহেলা ও অযন্তের কারণে ঐতিহ্যবাহী সাটিয়াজুরী ডাকঘরটি কোন দিন দেখেনি উন্নয়নের ছোঁয়া।
এই যদি আমাদের দেশের ডাকঘরের অবস্থা হয় তাহলে কি করে দেশের উন্নতি হবে? যদিও আজকাল সরকারি ডাকে ওপর মানুষ নির্ভর করেন না। আজকাল কুরিয়ার সার্ভিস প্রচলন হওয়ার পর চিঠিপত্র টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে আজকাল কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে সরকারি এই সব ডাকঘরগুলোও প্রয়োজন রয়েছে। কারণ সরকারি জরুরি ডকুমেন্ট এখনও ডাকঘরের মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরেই নানা অব্যবস্থার কারণে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এখনও সময় আছে সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটি জনগণের আস্থায় আনা সম্ভব। ডাকঘর আমাদের দেশে এক সময় যে ভূমিকা রেখেছিল সেই পূর্বকালের কথা কিন্তু আমরা এখনও ভুলিনি। সেই চিঠি ও টাকা পাঠানোর কথা আমাদের এখনও মনে আছে। তাই দেশের ডাকঘরগুলোকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট এই বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছি।