দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আদিম কালের ইতিহাস জানার জন্য মমি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় চিলিতে প্রাপ্ত মমি গবেষণা করে এদের শরীরে আর্সেনিকের বিপুল উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
উত্তর চিলিতে প্রাক কলম্বীয় সভ্যতাগুলো সহ ইনকাস ও চিনখোরো সংস্কৃতির লোকেরা ব্যবহৃত দূষিত পানির কারণে মারাত্মক আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় ভুগেছিল। আগের গবেষণা থেকে উচ্চভূমি এবং উপকূলবর্তী উভয় এলাকার মমির চুলে আর্সেনিকের উপস্থিতির প্রামান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু গবেষকেরা বুঝতে পারছিল না মানুষের পাকস্থলীতে থাকার কারণে নাকি কবর দেওয়ার পর মাটি থেকে এই বিষ ঢুকে পড়েছে।
আমেরিকার লস এঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক বিজ্ঞানী লোয়ানা কাকোওলির নেতৃত্বে সম্প্রতি গবেষণা চলে। নতুন এই গবেষণায় উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মমির চুল বিশ্লেষণ করা হয়। এইক্ষেত্রে চিলির আতাকামা মরুভূমির টারাপাকা উপত্যকার থেকে প্রাপ্ত ১০০০ থেকে ১৫০০ বছর পুরনো মমির চুল নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়। গবেষণার বিষয়বস্তু চুল হওয়ার কারণ হল, সময়ের সাথে সাথে হাড়, চামড়াসহ সবকিছুই পরিবর্তিত হয়ে গেলেও চুল অপরিবর্তিত থাকে। অর্থাৎ চুল মৃত্যুর পূর্বের শরীর ও রক্তের বিভিন্ন উপাদানের তথ্য সঞ্চিত রাখে।
কাকোওলি ও তার সহকারীরা উচ্চ প্রযুক্তির মাধ্যমে মমির চুল, চামড়া এবং কাপড়ের সাথে সাথে এর চারপাশে থাকে মাটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে। যথারীতি সবকিছুতেই আর্সেনিকের উপস্থিতি দেখা যায়। অতঃপর তারা খুব উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ দ্বারা মমির চুল নিরীক্ষণ করে। এর সাথে সাথে ক্যালিফোর্নিয়ার লরেঞ্জ বার্কলি জাতীয় গবেষণা কেন্দ্রে সিনক্রৌটন যন্ত্রে এক্সরে রশ্মির মাধ্যমেও পরীক্ষা করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, পানি পান করার ফলেই আর্সেনিকের বিষক্রিয়া হয়েছিল।
সচরাচর মাটি ও পানিতে আর্সেনিক-৫ থাকে। শারীরিক ক্রিয়ার ফলে এটি আর্সেনিক-৩ এ পরিণত হয়। পরীক্ষাগুলোয় মমির চুলে আর্সেনিক-৩ পাওয়া যায়। যা গৃহীত সিদ্ধান্তকে প্রতিষ্ঠিত করে।
কাকোওলির মতে, ব্যাপক তামার খনি মূলত আর্সেনিক দূষণের কারণ। এখান থেকে বৃষ্টির পানির সাথে আর্সেনিক নদীতে গিয়ে পড়েছিল। ঐ পানি পানের কারণেই মানুষগুলো আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় মারা যায়।
সূত্রঃ mashable