দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যেখানে প্লাস্টিক সামগ্রী বন্যপ্রাণী ও সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য হুমকি স্বরূপ সেখানে কানাডার শহরের মৌমাছি এটিকে নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে। মৌমাছি গুলো মৌচাক তৈরিতে প্লাস্টিক ব্যবহার করছে।
গালফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক প্রকাশ করেছেন, সেখানকার শহরের মৌমাছি গুলো মৌচাক তৈরিতে ছোট ছোট প্লাস্টিকের টুকরো, প্লাস্টিকের থলে আর প্লাস্টিকের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করে। সচরাচর ব্যবহার করা গাছের রজনের পরিবর্তে মৌমাছি প্লাস্টিক ব্যবহার করছে। একে গবেষকেরা মৌমাছির উর্বর মস্তিষ্ক আর মারাত্মক অভিযোজন ক্ষমতা হিসেবে দেখছেন।
প্রফেসর অ্যান্ড্রু মোর এবং ম্যাকভর একসাথে টরোন্টোতে মৌচাক পর্যবেক্ষনের সময় এই আবস্কারটি করেন। তারা গবেষণা করে দেখতে পান, মৌমাছির দুটি প্রজাতি প্রাকৃতিক নীড় নির্মাণ সামগ্রীর স্থানে প্লাস্টিক ব্যবহার করে।
প্রথম মৌমাছি Megachile campanulae ঐতিহ্যগতভাবে মৌচাক তৈরিতে গাছের রজন ব্যবহার করে। ম্যাকভর এদের মৌচাকে কিছু ধুসর বস্তু দেখতে পান। প্রাথমিক ভাবে তিনি এগুলোকে চুইংগাম মনে করেছিলেন। পরে মোর স্ক্যানিং ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ দ্বারা পরীক্ষা করে দেখেন এগুলো পলিমার। এরা মৌচাকের সেল গুলো তৈরিতে, সেল গুলো আটকাতে প্লাস্টিক ব্যবহার করে।
অন্য প্রজাতিটি হল Megachile rotundata। এরা প্রতিটি সেলের প্রায় এক চতুর্থাংশ প্লাস্টিক দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে ফেলেছে।
চিহ্ন দেখে বুঝা গেছে, মৌমাছি পাতার চেয়ে ভিন্ন ভাবে প্লাস্টিক চিবোয়। যা থেকে ধারণা করা যায় এরা ভুলে এটি করছে না, জেনে বুঝেই করছে। এরা প্রথমে প্লাস্টিকের সামগ্রী জোগাড় করে। পরবর্তিতে এগুলো চিবিয়ে আঠার মত নিঃসরণ করে মৌচাক তৈরিতে ব্যবহার করে। শুককীট গুলো ভালভাবেই প্লাস্টিকের ঘরে মানিয়ে নিতে পেরেছে। এটা এমন কি পরজীবীর আক্রমণ থেকেও রক্ষা করে।
গবেষকরা মনে করেন প্লাস্টিকের কারণে বিভিন্ন প্রজাতি এবং বাস্তুতন্ত্রের উপাদানের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে, যদিও কয়েকজন বিজ্ঞানী প্লাস্টিক সমৃদ্ধ পরিবেশে পোকামাকড়কে ভালভাবেই মানিয়ে নিতে দেখেছেন। মৌমাছির প্লাস্টিক ব্যবহার তাই নির্দেশ করছে।
মৌমাছির বুদ্ধিমত্তা দেখে অভিভূত হতে হয়। এদের শ্রম ব্যবস্থা, নিয়ম কানুন, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অসাধারণ। এরা যেকোনো পরিবেশে মানিয়েও নিতে পারে। মানুষের সাথে সাথে এরাও এগিয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক, ভবিষ্যতে মৌমাছি আর কতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারে!
সূত্রঃ ডেইলি মেইল