দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যালকোহল পরিহার করা, সিগারেট না খাওয়া, নিম্ন ক্যালরির খাদ্য গ্রহণ করা, সন্তান না নেওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে জীবনযাপন করা শুনতে আপনার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু দীর্ঘায়ু হওয়ার চাবিকাঠি হিসেবে একেই মানেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়স্ক খেতাব পাওয়া ব্যক্তিটি।
অ্যালেকজান্ডার ইমিচ নামের এই ব্যক্তির বয়স ১১১ বছর। তিনি নিউইয়র্কের অধিবাসী। দি নিউইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে জানা যায় যে, জেনেটিক্স পরীক্ষায় প্রমাণিত বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী ব্যক্তি তিনি। তার এই দীর্ঘজীবিতার পেছনে রয়েছে অনেকগুলো বিষয়। তিনি সিগারেট, অ্যালকোহল পান করতেন না, খেতেন নিম্ন ক্যালরির খাবার। আর এগুলোই হলো তার দীর্ঘজীবীতার মূলমন্ত্র। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, তার এই অভ্যাসগুলো তার জেনেটিক্স বৈশিষ্ট্যকে প্রভাবিত করেছে মাত্র কিন্তু তিনি কত বছর বেঁচে থাকবেন তা নির্ধারণ এর ফলে হয়নি।
ইমিচ ১৯০৩ সালের ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখ পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। ক্যালিফ শহরের জেরেন্টোলজি গবেষণা কেন্দ্রের মতে তিনি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘজীবি মানুষ। তার আগে এই রেকর্ডটি ছিল ইতালির অধিবাসী আর্তুরু রিকার্ডো। তিনি এই বছরের এপ্রিল ২৪ তারিখ মারা যান। মারা যাওয়ার সময় তার বয়স ছিল ১১১ বছর ৩৫৭ দিন। বর্তমানে অ্যালেকজান্ডার ইমিচ হলেন সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ। সবচেয়ে বেশি বয়সের নারীটি হলেন জাপানের মিশাও ওকায়া। তার বর্তমান বয়স ১১৬ বছর।
ইমিচ তার এই দীর্ঘজীবিতা প্রসঙ্গে বলেন, আমি কখনো এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করিনি। আমি ভাবতেই পারিনি আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। ইমিচ যখন ১০ মাসের একটি শিশু তখন রাইট ব্রাদার্সরা আকাশে উড়ার প্লেন উদ্ভাবন করে ছিলেন। তিনি মনে করতে পারেন প্রথমদিকের যানবাহনগুলোর কথা যা তিনি তার শহরে দেখতেন। বোলসেভিক্স যুদ্ধে পোলিশ এবং সোভিয়েতের সংঘাতের সময় তিনি হলোকাস্টের শিকার থেকে বাঁচতে সোভিয়েতে পালিয়ে যান। তারপর সোভিয়েতের গুলাগ শহরে আশ্রয় নেন। তারপর সেখান থেকে ইমিগ্রেশন নিয়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১৯৯২ সালে তার একটি বই প্রকাশিত হয়। তার এই দীর্ঘজীবিতার কারণ বলতে গেলে তিনি বলেন, তিনি এবং তার স্ত্রী সন্তান নেননি। তিনি অ্যালকোহল, ধূমপান থেকে বিরত ছিলেন। তবে তিনি তার এই দীর্ঘজীবনের জন্য ধন্যবাদ দেন তার জীনকে। তিনি মনে করেন, তার এই দীর্ঘজীবি জীনের কারণেই তিনি এত বছর বেচে থাকতে পেরেছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রসঙ্গ উঠলে তিনি কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি মনে করেন তার এত বছরের জীবনে সবচেয়ে দুঃসহ যে দিনগুলোর কথা আজো মনে হলে শিহরিত হয়ে পড়েন তারমধ্যে অন্যতম হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আজো আমাকে কাঁদায় আমি শিহরিত হই এর বর্বরতার কথা স্মরণ করে। আমার তখন মনে হত আমি বুঝি আজই মারা যাব। কিন্তু সেই বিভীষিকা অতিক্রম করে আমি আজো বেঁচে আছি।
তথ্যসূত্রঃ নিউজম্যাক্সহেলথ