দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে আবিষ্কৃত এই থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি একবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে প্রায়োগিক সব চমক দেখাতে শুরু করেছে। এই প্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা এমন অনেক জিনিসই পাচ্ছি যা তৈরি করা রীতিমতো অসম্ভব ছিল।
এই থ্রিডি প্রযুক্তির যাত্রা শুরু হয়েছিল যাদের হাত ধরে তাদের মধ্যে দুইজনের নাম সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। চার্লস ডব্লিউ হাল হলেন আধুনিক থ্রিডি প্রিন্টারের আবিষ্কারক। আর এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটান জাপানের নাগোয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ ইন্সটিটিউটের হিদেও কোদামা। উইকিপিডিয়া ভাষ্য মতে থ্রিডি প্রিন্টিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে ডিজিটাল মডেলের মাধ্যমে কার্যত কোন ত্রিমাত্রিক বস্তু তৈরি করা যায়। থ্রিডি সিস্টেম কর্পোরেশন ১৯৮৪ সালে একটি কর্মউপযোগী থ্রিডি প্রিন্টারের নকশা করে তা বাজারজাত শুরু করেন।
থ্রিডি প্রিন্টিং নিয়ে আরো জানুনঃ এবার থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে তৈরি হবে খাবার!
প্রথম দিকে থ্রিডি প্রিন্টার মাধ্যমে শুধুমাত্র বিভিন্ন বৃহদাকার ভারী শিল্পের প্রটোটাইপ যান্ত্রিক উপকরণ তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। তারমধ্যে রয়েছে বিমান শিল্পের নাট-স্ক্রু তৈরি, গয়না শিল্পের উপকরণ থেকে শুরু করে ভারী শিল্পের কঠিন উপাদানগুলো। কিন্তু ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিক উন্নয়নে বর্তমানে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে থ্রিডি প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয় না। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে তৈরি বিশালাকার থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে বাড়িঘর। লন্ডনের বিভিন্ন রিসার্চ ইন্সটিটিউট মানব শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি শুরু করেছে এই থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে।
আরো জানতে পরুনঃ থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে মানবদেহের কৃত্রিম অঙ্গ প্রত্যঙ্গ
কিন্তু প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থ্রিডির এই জয়যাত্রা মাত্র শুরু হলো, সামনে আরো অসম্ভবকে সম্ভব করবে এই থ্রিডি প্রিন্টার। অদূর ভবিষ্যতে এই থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে মানুষ ঘরেই তৈরি করবে সিনথেটিক ফুড। বায়োটেক খাদ্যর উত্তরোত্তর গবেষণার কল্যাণে ঘরেই হয়তো তৈরি করা যাবে বিভিন্ন প্রাণীর মাংস। সেখান থেকে সিনথেটিক উপাদেয় খাদ্য। কিন্তু জাপান এই থ্রিডি প্রিন্টারের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে। তারা বন্ধ্যাত্ব নারীদের এই সমস্যা দূর করতে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে তৈরি ফিটাস বা ভ্রূণ তৈরির চেষ্টা করছে। যদি এই আবিষ্কারটি সম্ভব হয় তবে তা মানবজাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে আশা করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্টেমসেল গবেষণার জন্য থ্রিডি প্রিন্টারের কথা চিন্তা করছে- এর ফলে শরীরের বিভিন্ন মাইক্রো অর্গান তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হয়।