দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি বাংলাদেশে কিছু এজেন্সি নামের দালাল চক্র মালয়েশিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসার নামে সহজ সরল সাধারণ মানুষদের ফুল টাইম কাজের লোভ দেখিয়ে বিপদে ফেলছে। অথচ মালয়েশিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসায় ফুলটাইম কাজ করার কোন সুযোগ নেই।
পড়াশোনার পাশাপাশি পুরোদমে চাকরির সুযোগ- এই হাতছানিতেই শত শত শিক্ষার্থী পাড়ি জমাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। কিন্তু, সুযোগের নামে এটি একটি বড় ধরনের প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনটাই উঠে এসেছে একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে।
মূলত বিদেশীরা যদি মালয়েশিয়াতে পড়াশুনা করতে আসে তবে পড়াশুনার পাশাপাশি কেবল কিছু সময় পার্টটাইম কাজ করার সুযোগ পায়। এখানে কোন মতেই বৈধ ভাবে কোন স্টুডেন্ট ভিসায় আসা শিক্ষার্থী কোথাও ফুলটাইম কাজ করতে পারেনা। মালয়েশিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থায় ফুল টাইম চাকরির কোনো সুযোগই রাখা হয়নি।
এদিকে মালয়েশিয়াতে চাকরির অবস্থাও এখন ভালো নেই। এখানে পার্টটাইম চাকরি করলে হয় বাসাবাড়ি কিংবা কোন দোকানে কাজ করতে হবে তাও আপনাকে দিয়ে এরা অনেক বেশি খাটিয়ে নিবে। দিন শেষে আপনার হাতে জুটবে দৈনিক ২০ থেকে ৪০ রিঙ্গিত (সর্বোচ্চ), যা বাংলাদেশি টাকায় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। মাসে এভাবে আয় হয় বড়জোর ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্য়ন্ত; যা দিয়ে তার নিজেরই থাকা-খাওয়া সম্ভব হয় না।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন এজেন্সি এবং মালয়েশিয়ান কিছু অসাধু মহল প্রতারণার ফাঁদ পেতে সহজ সরল কিছু মানুষকে ফুলটাইম চাকরির লোভ দেখিয়ে বলছে, মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। যা দিয়ে নিজে চলে দেশেও পাঠানো সম্ভব। বাস্তবতা আসলে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যারা এখানে আসছেন ফুলটাইম কাজের লোভে তারা সবাই মোটামুটি বাস্তবতার সাথে নিজেদের ভাগ্যকেই দুষছেন।
এখানে পড়াশুনা করতে এলে আপনার কমের মাঝে ৪ লক্ষ টাকা ফ্যাকাল্টি খরচ লাগবেই। সাথে আপনার থাকা খাওয়া খরচ রয়েছে। আপনি যদি ঠিক-ঠাক পড়াশুনা করতে চান তবে এই খরচ মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার আপনার দেশের পরিবার থেকেই নিতে হবে। এখানে চাকরি করে পড়াশুনা করা সম্ভব না। আবার পার্টটাইম কাজ করে দিন শেষে পড়াশুনা করার সময় আপনি পাবেন না। এমনকি কলেজে নিয়মিত উপস্থিত না হওয়ার ফলে নতুন বছরের ভিসা পেতেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।
মালয়েশিয়াতে প্রায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে এভাবে প্রতারণা করে শিক্ষার্থী আনা নিয়ে প্রতিবেদন হচ্ছে যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। নানা জবরজং প্রচারণার মাধ্যমে ঢাকা ও কুয়ালালামপুরে বেশ কিছু দালাল চক্র এ ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করছেন তাদের। এখনই যদি দেশে গজিয়ে উঠা এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হয় তবে আরও অসংখ্য সাধারণ মানুষ- না বুঝেই সব কিছু হারাবেন।