দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুমের ঘাটতি শুধুমাত্র শরীর থেকে শক্তি কমে যাওয়ার একমাত্র কারণ নয়। আরো এমন অনেক শারীরিক কারণ রয়েছে যা আপনার শরীরের শক্তির হ্রাসের কারণ হতে পারে। আপনি আপনার নিত্যদিনের কাজে এমন কিছু করতে পারেন যা আপনার শরীরের এই শক্তির ঘাটতিকে প্রশমিত করতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কি ধরনের খারাপ অভ্যাস ত্যাগের মাধ্যমে আপনি আপনার শারীরিক ঘাটতিকে দূর করতে পারেন এবং নিজেকে রাখতে পারেন সুস্থ। এর ফলে আপনার কর্মচঞ্চল দিনটি হতে পারে আরো সুন্দর।
১. শারীরিক ব্যায়াম না করা
আপনি যদি আপনার একটি নিত্যদিনের কাজ শক্তির ক্ষয় হবে ভেবে যদি পরিহার করেন। তবে মনে করেন আপনার কাজটির বিরুদ্ধে চলে গেলেন। ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রতিদিন যদি আমরা মাত্র ২০ মিনিট সময় ব্যয় করে শারীরিক ব্যায়াম করি তবে তা আমাদের নিত্যদিনের খাবারের শক্তির পূর্ণ ব্যবহার করতে পারে। কেননা প্রতিদিনের ব্যায়াম আমাদের শরীরের শক্তিকে আরো বেশি দৃঢ়তা দিয়ে থাকে।
২. যদি পর্যাপ্ত পানি না খান
আপনি যদি সামান্য পরিমাণ ডিহাইড্রেট হয়ে পড়েন, তবে আপনার অনেক বেশি দুর্বল লাগবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে আমাদের শরীরের থাকা প্রায় ৬০ শতাংশ জলের মধ্য থেকে যদি মাত্র ২ শতাংশ জল ঘামের মাধ্যমে চলে যায় তবে তা শরীরের অনেক শক্তিকে পর্যবসিত করে। ফলে আপনি হয়ে পড়বেন দুর্বল। গবেষকরা বলেন, পানির মধ্য থাকা মিশ্রিত অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে আপনার শরীরের শক্তিকে পোড়াতে সাহায্য করে ফলে আপনি পেয়ে থাকেন শক্তি।
৩. যদি আপনার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ আয়রণ না থাকে
শরীরে আয়রণের অভাব দেখা দিলে আমাদের মধ্যে আলস্য, খিটখিটেভাব চলে আসে। শরীরে আয়রণের অভাব দেখা দিলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের কোষে গিয়ে পৌঁছোতে পারে না অক্সিজেন ফলে শরীরে চলে আসে আলস্য। আয়রণের অভাবে শরীরে অ্যামনিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরুর মাংস, বরবটির বীজ, ডিমের কুসুম আয়রণ ধারণ করে প্রচুর পরিমাণ। শরীরে আয়রন বৃদ্ধি করতে এগুলো খেতে পারেন।
৪. যদি আপনার সকালের নাস্তা ঠিকমত না করে থাকেন
খাবার হলো আমাদের শরীরের জ্বালানী। আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন, তখন আপনার রাতের খাবার আপনার শরীরের রক্তের প্রবাহ এবং অক্সিজেন প্রবাহ অব্যাহত থাকার জন্য ব্যয় হয়। তাই আপনি যখন সকালে ঘুম থেকে উঠবেন তখন আপনার শরীরের পুনরায় জ্বালানী সরবরাহ করার প্রয়োজন হয় এবং এই জ্বালানীটি আসে সকালের খাবার থেকে তাই আমাদের সকালের খাবারটি শরীরের জন্য বেশ প্রয়োজনীয়।
৫. আপনি বেশি জাঙ্ক খাবার নির্ভরশীল হলে
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনুসারে জাঙ্ক ফুডগুলো শরীরের কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় ফলে শরীরের রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তাই জাঙ্কফুড যতটা সম্ভব পরিহার করা উচিত। শরীরের রক্তের সুগারের পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে আপনি শস্যজাতীয় খাবার খেতে পারেন।
৬. আপনি যদি কফি আসক্ত হয়ে থাকেন
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিন তিন কাপ কফি আপনার শরীরের আলস্যভাব দূর করে আপনার মধ্যে গতিশীলতা আনবে। কিন্তু আপনি যদি বেশি কফি আসক্ত হয়ে থাকেন তবে তা আপনার কর্মচাঞ্চল্যকে ব্যাহত করতে পারে। কেননা ক্যাফেইন আপনার ঘুমের সময়কে নষ্ট করে দিতে পারে। মস্তিষ্কের অ্যাডেনোসিন এনজাইমের কারণে আমাদের শরীরে ক্লান্তিভাব আসে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। ক্যাফেইন এই অ্যাডেনোসিনকে বন্ধ করে দেয়।
৭. ঘুমের সময় ইমেইল চেক করা
ট্যাবলেট, স্মার্টফোনের এই যুগে অনেকে ঘুমানোর সময় সারাদিনের ইমেইল এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রবেশ করে থাকেন। এটি করা উচিত নয় কেননা এই সকল ইমেইল কিংবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের একটি নোটিফিকেশন আপনার ঘুমের ভাবকে নষ্ট করতে যথেষ্ট। তাই এই প্রবণতা পরিহার করার চেষ্টা করুন।
তথ্যসূত্রঃটাইম