দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ কফি পান করে। ক্লান্তি দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করায় সবারই কফি পছন্দের। মূলত কফি বিন থেকে কফি প্রস্তুত করা হয়। তারপরও স্থানভেদে ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ভিন্নতার কারণে একেক স্থানের কফি একেক স্বাদের। এগুলোর দামও ভিন্ন ভিন্ন। তবে এমন অনেক কফি আছে যেগুলোর দাম শুনলে পিলে চমকে উঠবে। চলুন, আপনাদের এমন কিছু দামি কফির সাথে পরিচয় করিয়ে দিই…
কফি লুয়াকঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল কফি এটি। এর প্রস্তুত প্রণালী খুবই অদ্ভুত। এই কফির প্রক্রিয়াকরণে এক ধরনের বিড়াল ব্যবহার করা হয়। এই বিড়ালের প্রজাতিটি ভাম বিড়াল নামে পরিচিত। কফির বীজগুলো ভাম বিড়ালটিকে খাওয়ানো হয়। হজম হওয়া বীজ এর মল থেকে আলাদা করা হয়। তা থেকে এক ধরনের নরম, স্বাদযুক্ত কফি তৈরি করা হয়ে থাকে। ইন্দোনেশিয়ার জাভা, বালি এবং সুলাইয়েসিতে কপি লুয়াক তৈরি করা হয়ে থাকে। এর মূল্য ধরা হয় ১০০-৬০০ পাউন্ডের কাছাকাছি।
ব্ল্যাক আইভরি কফিঃ
বিশ্বে আরেকটি ব্যয়বহুল কফির নাম হল থাইল্যান্ডের ব্ল্যাক আইভরি কফি। মজার ব্যাপার হচ্ছে এটি প্রস্তুত করা হয় হাতির গোবর থেকে। উত্তর থাইল্যান্ডের জমিতে লাগানো কফির বীজগুলো হাতিকে খাওয়ানো হয়। হাতির গোবর থেকে কফি সংগ্রহ করে প্রস্তুত করা হয় ব্ল্যাক আইভরি কফি। হাতির পাকস্থলীতে থাকা অ্যাসিড কফির প্রোটিন ভেঙ্গে ফেলে। এতে নরম গন্ধযুক্ত কফি পাওয়া যায়। থাইল্যান্ডের সব জায়গাতেই এই কফি পাওয়া যায়। প্রতি কাপ কফি পান করতে আপনাকে ৫০ ডলার খরচ করতে হবে।
ইএল ইনজার্টোঃ
ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের মত গুয়াতিমালায় প্রচুর পরিমাণে কফি উৎপাদন হয়। গুয়াতিমালার হিউহিউটেনাঙ্গোর পাহাড়ি অঞ্চলে যে কফির চাষ হয় তা থেকে তৈরি হয় ইএল ইনজার্টোকফি।ফলের সুগন্ধ ও সুমিষ্ট স্বাদের জন্য এটি বেশ বিখ্যাত। এর মূল্য ৫০ পাউন্ডেরও বেশি।
ইস্মেরালডা স্পেশালঃ
পানামার ইস্মেরালডা কফি বেশ সুস্বাদু এবং দামি। পশ্চিম পানামার বারু পর্বতে হাসেইন্ডা লা ইস্মেরালডা ফার্মে এই কফির চাষ হয়ে থাকে। বয়ষ্ক পেয়ারা গাছের ছায়ার নিচে এই কফির চাষ করা হয়। বিশ্বের মানুষ এর ব্যতিক্রমী স্বাদের জন্য পছন্দ করে। ফল এবং ফুলের সুমিষ্ট সুবাসের জন্যই মূলত এটি বেশ বিখ্যাত। কফি বীজগুলোকে হাতে তোলা হয়। তারপর ফার্মেই এগুলোর প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়। কাপ প্রতি এই কফির মূল্য পড়ে ৩৫০ পাউন্ডের মত।
সেইন্ট হেলেনা কফিঃ
সেইন্ট হেলেনা কফি উৎপন্ন হয় ফ্রান্সে। গুণমানের পাশাপাশি মূল উৎপাদন স্থানের জন্য এই কফিটি বেশ বিখ্যাত। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দূরবর্তী অঞ্চল সেইন্ট হেলেনা নামক স্থানে এই কফির চাষ হয়। সেখানেই প্রক্রিয়াজাত করে অতঃপর বাজারজাত করা হয়। নেপোলিয়ান নিজে এই স্থানে কফির বীজ বুনেছিলেন। কাপ প্রতি এই কফির মূল্য পড়ে ৭৫ পাউন্ডের বেশি।
যারা কফি খেতে অভ্যস্ত তাদের অনেকের পক্ষেই হয়ত এই দামে কফি খাওয়ার সামর্থ নেই। তবে সৌখিন কফি প্রেমীরা চাইলে পরখ করে দেখতে পারেন। অসাধারণ দামের এই কফিগুলো কিন্তু অসাধারণ স্বাদেরও। এত দামের পরেও এগুলোর বিক্রি কিন্তু সীমিত নয়।
সূত্রঃ therichest