দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আলিয়াত শেকাদ ইসরায়েলি পার্লামেন্টে দেশটির অতি ডানপন্থী রাজনৈতিক দল জুইশ হোমের প্রতিনিধি। দেখতে দেবীর মত হলেই এই নারী বাস্তবে ভয়ংকর এক মানসিকতার পরিচয় বহন করে। মূলত জুইশ হোম ফিলিস্তিনে হামলা চালানোর জন্য সবচেয়ে কট্টর পন্থি ইসরায়েলি দল।
আলিয়াত শেকাদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কিছু পোস্ট করে যা পড়লে একজন সুস্থ বিবেকবান মানুষ নিশ্চিত নিজেকে মানুষ হিসেবে ভাবতেও লজ্জা পাবেন। আলিয়াত শেকাদ নিজের স্ট্যাটাসে একদিন পোস্ট করেন, ‘প্রতিটি সন্ত্রাসীর পেছনে রয়েছে ডজন ডজন নারী ও পুরুষ, যাদের ছাড়া আজকের ফিলিস্তিনে সন্ত্রাসবাদে যুক্ত হতে পারতনা না অসংখ্য সন্ত্রাসী। এরা সবাই ফিলিস্তিনের হামাস সন্ত্রাসী তারা সবাই শত্রুপক্ষীয় যোদ্ধা… আমি বলব প্রতিটি ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীদের মেয়েরাও সমান ভাবে সন্ত্রাসের জন্য দায়ী। যারা তাদের সন্তানদের ফুল ও চুমু দিয়ে নরকে পাঠায়। তাদেরও তাদের সন্তানদের পরিণতি বরণ করা উচিত, এর চেয়ে ন্যায়বিচার আর কিছু নেই। বাড়িগুলোর মতো তাদেরও নিপাত যাওয়া উচিত। সেই বাড়িগুলো, যেখানে তারা সাপ লালন-পালন করেছে। তা না হলে আরও বাচ্চা সাপ সেখানে লালিত-পালিত হবে।’
এর পর এই নারী সংসদ সদস্য আরেকটি স্ট্যাটাস দেন ঠিক যেদিন এক নিরিহ ফিলিস্তিনি শিশুকে ধরে নিয়ে পুড়িয়ে মারে ইসরায়েলি সেনারা। আলিয়াত শেকাদ সেদিন নিজের স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘এটা সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়; চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও নয়, এমনকি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধও নয়। বাস্তবতা হচ্ছে, এটা দুজন মানুষের মধ্যে যুদ্ধ। শত্রু কে? ফিলিস্তিনি জনগণ। কেন? তাদের জিজ্ঞাসা কর, তারাই এটা শুরু করেছে।’ আলিয়াত শেকাদ এর কথা মত নিরীহ সেই শিশু খাদির মৃত্যুর আগেই তাকে শত্রু কে বানিয়ে দিলেন? আলিয়াত শেকাদ নিজেই, আর শিশু খাদি কি ইসরায়েলিদের কোন ক্ষতি করেছিল? তাও বিরাট প্রশ্ন আজ।
আজকের ইসরায়েলকে আর কোনোমতেই ভুক্তভোগী বলা যাবে না। বরং, তারা বর্তমান সংকটের সংঘটক। এরা কোনো অপরাধবোধ বা অনুশোচনা তো দূরের কথা, উলটা নির্দোষ নারী ও তাদের অনাগত সন্তানদের মৃত্যু কামনা করছে। সন্ত্রাসী কারা? বিশ্ব বিবেকার কাছে আজকে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন!
আজকে ইসরায়েল অর্থনীতি সমর শক্তি সব কিছুতেই শক্তিশালী কিন্তু আজ থেকে অনেক বছর আগে তারা এমন ছিলোনা, তারাই ছিলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে জেকে বসা উদ্বাস্তু সমাজ। তবে ফিলিস্তিনিরা তখন যেমন ছিলো আজও তেমন। ফিলিস্তিনিদের অস্র নেই, ট্যাঙ্ক নেই তারা সাধারণ, তাদের আগে বসতভিটা ছিলো আজ তাও নেই কেড়ে নিয়েছে ইসরায়েলের আলিয়াত শেকাদরাই, তাহলে শত্রু কারা? কারা শত্রুতা শুরু করেছে?
শেকাদ যা চেয়েছিলেন, তা পেয়েছেন: গাজায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি চারজনে একজনই শিশু। অন্যদিকে হামাসের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ইসরায়েলের একজনেরও প্রাণহানি হয়নি। আর গাজায় যখন বোমা-বৃষ্টি হচ্ছে, ইসরায়েলি তরুণ-তরুণীরা তখন অট্ট হাসিতে মজে উঠছে।
ইতিহাস কাউকেই ছেড়ে কথা বলেনি ভয়ংকর সব দুর্দান্ত শাসকদের পতন হয়েছে নির্মম ভাবে। ইতিহাস বাড়াবাড়ি কখনোই মেনে নেয়না। পতন হবেই একদিন আলিয়াত শেকাদদের! সে দিনের অপেক্ষায়।
সূত্র– ইন্ডিপেনডেন্ট