দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পবিত্র ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে দিনাজপুরের সীমানন্তবর্তী উপজেলাগুলোতে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে লাচ্ছা সেমাই তৈরির কারখানা। এসব কারখানায় অস্থাস্থ্যকর পরিবেশে পা দিয়ে খামিরা তৈরি করে লাচ্ছা সেমাই তৈরি করা হচ্ছে।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয হচ্ছে এসব সেমাই তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিষাক্ত তেল ও রং ছাড়াও মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন উপাদান। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে এসব খবর প্রকাশ পেলে প্রশাসনের টনক নড়ে। স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালিয়েও প্রতিকার হচ্ছে না তাতে।
আকর্ষর্ণীয় মোড়কে মোড়ানো, দেখতে সুন্দর লাচ্ছা দেখে বোঝার উপায় নেই, এসবে ব্যবহার হচ্ছে বিষাক্ত তেল ও রং ছাড়াও মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন উপাদান। দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতয়ালীর সিকদারহাট, ফুলবাড়ী, বিরল, বিরামপুর, হাকিমপুর-হিলি, পার্বতীপুরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব লাচ্ছা সেমাই তৈরির কারখানাগুলোতে লাচ্ছা উৎপাদনের নামে চলছে, জনস্বাস্থ্য ধবংসের তৎপরতা। সেমাই তৈরীতে যে ময়দা, তেল, রং মেশানো হচ্ছে, তা সব কিছুতেই বিষাক্ত উপাদান।
ময়দা মাখানো খামিড়ের কাজ চলছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। পা দিয়ে মাড়িয়ে এভাবেই খামিরা বানানো হচ্ছে। এসব কারখার অধিকাংশই নেই বিএসটিআই’র অনুমোদন। কারখানার বাইরে থেকে প্রবেশ নিষেধ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে অথবা গেটে তালা ঝুলিয়ে বা গেট বন্ধ করে চলছে লাচ্ছা সেমাই তৈরীর কাজ। দিনাজপুর দক্ষিণ কোতয়ালীর সিকদার হাট এলাকায় রজ্জব লাচ্ছা সেমাই তৈরীর কারখানায় গিয়ে দেখা যায় বেহাল দশা। এই কারখানার নেই কোনো ধরনেরই লাইসেন্স। অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে চলছে লাচ্ছা তৈরির কাজ। শুধু রজ্জব লাচ্ছা নয়, দিনাজপুরের অধিকাংশ কারখাকায় পা দিয়ে মাড়িয়ে লাচ্ছার খামির মাখানোর কাজ চলছে।
তবে এ ব্যাপারে বেকারী মালিক সমিতির সভাপতি সাইফুল্লহ জানিয়েছেন, সনাতন পদ্ধতিতে পা দিয়ে মাড়িয়ে লাচ্ছা তৈরী হয়ে আসছে। আমরা এসব বর্জন করতে চাই। তাই অনেকে এখন মেশিন দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত লাচ্ছা সেমাই তৈরী করছে।
যারা বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়াই অস্বাস্থ্যযকর পরিবেশে লাচ্ছা তৈরী করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর হস্তক্ষেপ নিক এটা আমরাও চাই। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। যাতে অবৈধ লাচ্ছা সেমাই তৈরীর কারখানাগুলো বন্ধ হয়। আমি অবৈধ সেমাই তৈরির কারখানার তালিকা জেলা প্রশাসক সাহেবকে দিয়েছি।
অবৈধ এসব কারখানায় ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে তৈরী এসব লাচ্ছা প্রাণঘাতি বলে জানিয়েছেন, দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মাসতুরা বেগম জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, বিষাক্ত তেল ও রং ছাড়াও মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি এসব লাচ্ছা সেমাই খেয়ে মানুষ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব লাচ্ছা খেয়ে পেটের পীড়া থেকে শুরু করে গ্যাষ্টিক, আলসার, ক্যানসার থেকে শুরু করে কিডনী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
ব্যক্তিগত অনুসন্ধান চালিয়ে লিখা পাঠিয়েছেন- শাহ্ আলম শাহী