পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা মানুষের বিদায়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা মানুষ নিওনিড স্ট্যাডনিক মাত্র ৪৪ বছর বয়সেই বিদায় নিয়েছেন। তার উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি।

পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা মানুষটিই ছিলেন নিওনিড স্ট্যাডনিক। তার দেহ এতই বিশাল ছিল যে, শবযানে তার জায়গা হয়নি। এই বিশাল আকৃতির মানবের এই মানবের অন্তিম যাত্রার মিছিলের জন্য তাকে শেষ পর্যন্ত তোলা হলো এক ট্রাকে। এই বিশাল আকৃতির মানব নিওনিড স্ট্যাডনিক বয়স হয়েছিল ৪৪। ধারণা করা হতো, তার উচ্চতা ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি। কিন্তু উচ্চতা মাপাকে অপমানজনক মনে করতেন নিওনিড স্ট্যাডনিক। আর তাই গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের কর্মকর্তাদের প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।

Related Post

জানা যায়, ১২ বছর বয়সে মস্তিকে এক অপারেশনের পর হতে তার উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। এক ধরনের হরমোন তার এই উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তখন থেকেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এটা তার জন্য অভিশাপ। অতিরিক্ত উচ্চতার কারণে তিনি কখনও বাসে উঠতে পারতেন না। তিনি বলতেন, ‘গাড়ি আমার জন্য নয়।’ মৃত্যুর সময়ও একই সমস্যা হয়েছে। ইউক্রেনে যেভাবে শবদেহ নেওয়া হয়ে থাকে কবরস্থানে, ঠিক সেভাবে তার শবদেহটি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার শবদেহটি কবরস্থানে নেওয়া হয় খোলা ট্রাকে করে ।

অনেকেই তার উচ্চতা নিয়ে প্রশংসা করলে নিওনিড স্ট্যাডনিক বলতেন, ‘উচ্চতা আমার জন্য একটি অভিশাপ। ঈশ্বরের পক্ষ হতে একটি শাস্তি। এতে আনন্দ করার কিছু নেই। জানি না, আমি কি পাপ করেছি। আমি আর সবার মতো হওয়ার স্বপ্ন দেখি। ইউক্রেনে আমার জন্য বেঁচে থাকাটাই জরুরি।’

নিওনিড স্ট্যাডনিকের চেয়ে ইঞ্চি খানেকের মতো খাটো হওয়ার পরেও ‘বাও ইসহুন’ নামে অপর এক ব্যক্তি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

স্ট্যাডনিক ছিলেন তার স্কুলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। টিটস নামেই সবাই তাকে ডাকতো। নিওনিড স্ট্যাডনিক ২৭ সাইজের জুতা পরতেন। যার দৈর্ঘ্য ছিল ১৮ ইঞ্চি। তার প্রকাণ্ড হাতের ব্যাস পা হতে অনেক বেশি ছিল। নিওনিড স্ট্যাডনিক সব সময় বলতেন, উচ্চতাই তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। ‘আমি শীতকালে ঠাণ্ডা হতে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আমার সাইজের জুতো খুঁজে পাই না। আর সেজন্য আমি কাজও করতে পারি না। আমি সবচেয়ে লম্বা মানুষ এটা ঠিক। কিন্তু আমি সেইসঙ্গে সবচেয়ে অসহায় মানুষও।’ তিনি বলতেন, আমি চাইনা আমার সমস্যায় আমার স্ত্রী হানা দিক।স্ট্যাডনিক বিয়ে না করেই মারা যান।

তিনি দুটি বিছানা একত্র করে ঘুমান। তিনি কখনো কারো বোঝা হতে চাননি। নিওনিড স্ট্যাডনিক বলতেন, ‘আমি চাইনা আমার সমস্যায় আমার স্ত্রীও পড়ুক।’ স্ট্যাডনিক তাই বিয়ে না করেই মারা যান। প্রতিবেশীদের সবসময় সবধরনের সাহায্য করতেন তিনি। ব্রোনস্লেভ নামের এক ভদ্রলোক নিওনিড স্ট্যাডনিককে প্রশংসা করে বলেন, বিশুদ্ধ আত্মা, নিঃস্বার্থ, পরিশ্রমী এক মানুষ ছিলেন নিওনিড স্ট্যাডনিক। তিনি ছিলেন বড় মাপের এক মানুষ। আরও জানতে ক্লিক করুন: thetallestman.com

This post was last modified on আগস্ট ৩০, ২০১৪ 4:33 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শীতে রোগমুক্ত জীবন চাইলে বন্ধুত্ব করুন এই দেশীয় ভেষজের সঙ্গে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে এই ভেষজগুলো প্রতিদিনের…

% দিন আগে

ইউটিউবেও এবার এআই টুল যুক্ত করলো গুগল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হলো ইউটিউব। অনলাইনে আয়…

% দিন আগে

শীতে শিশুদের জুভেনাইল আর্থ্রাইটিসের সমস্যা বৃদ্ধি পেলে কীভাবে সামাল দেবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আর্থ্রাইটিস, অর্থাৎ বাত যে শিশুদেরও হয়, সে কথা অনেকেই হয়তো…

% দিন আগে

ইধিকার প্রেমের গুঞ্জন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো 'প্রিয়তমা'…

% দিন আগে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ষবরণে গাড়ি হামলায় ১৫ জন নিহত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্স শহরের ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারে বর্ষবরণের উদ্‌যাপনে…

% দিন আগে

বিচিত্র এক উদ্যোগ: জানাজা নামাজ আদায় প্রতিযোগিতা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেক প্রতিযোগিতা দেখে থাকি। তবে আজ এমন এক বিচিত্র…

% দিন আগে