দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র অনেক দরকারি একটি জিনিস। রাস্ট্রের বিভিন্নি সুবিধা পেতে গেলে এই কার্ড সবার থাকা প্রয়োজন। কিন্তু কি করবেন যখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রটি হারিয়ে বা চুরি যায়? কিভাবে, কোথায় আবেদন করবেন নতুন পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য? এমন সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আমাদের আজকের পোস্ট।
জাতীয় পরিচয়পত্র যদি হারিয়ে যায় কিংবা আগের দেয়া কোনও তথ্য সংশোধন করতে হয় তবে অবশ্যই আপনাকে কিছু কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে ‘ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্প’- এর পরিচালকেরকাছে আবেদন পত্র লিখতে হবে। আর এই আবেদন পত্র পাওয়া যায় আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলায় প্রকল্প কার্যালয়ে। আপনার আবেদন পত্র জমা দিতে হবে আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলায় প্রকল্প কার্যালয়েই, সেখানে জমা দেয়ার পর আপনাকে সংশোধিত পরিচয় পত্র বুঝে নেয়ার একটা সময় দেয়া হবে এবং ওই সময়ের মাঝে আপনাকে পরিচয় পত্র বুঝে নিতে হবে।
এবার চলুন জেনে নেয়া যাক বিভিন্ন কারণে যদি আপনার পরিচয় পত্র হারিয়ে যায় কিংবা সংশোধন করা লাগে তবে নতুন পরিচয় পত্রের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আপনার যা যা লাগবে-
১। এসএসসি বা সমমান সনদ,
২। নাগরিকত্ব সনদ (স্থানীয় ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে)
৩। জন্মনিবন্ধন সনদ (স্থানীয় ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে)
৪। চাকরির প্রমাণপত্র (যদি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন)
৫। পাসপোর্ট (যদি থাকে)
৬। নিকাহনামা এবং (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)
৭। পিতা, স্বামী কিংবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
উপরে উল্লেখিত আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত এসব নথি অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে। আর সত্যায়িত এসব কপির ক্ষেত্রে যার যা আছে তাই দিতে হবে। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন ক্ষেত্রে কি কি লাগে-
আপনি যদি নাম পরিবর্তন করতে চান-
অনেকের বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম ভুল আসে। এক্ষেত্রে নিজের নাম সংশোধন কিংবা নাম পরিবর্তন প্রয়োজন হয়। এর জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি তবে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা এর নিচে হলে দিতে হবেনা, এছারা আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তবে নিকাহ নামা দিতে হবে, সাথে স্বামী বা স্ত্রীর পরিচয় পত্রের সত্যায়িত ফোটো কপি। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট এবং জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নাম পরিবর্তনসংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের কপি। নাম পরিবর্তনের জন্য প্রার্থীকে শুনানির দিন প্রকল্পের কার্যালয়ে কাগজপত্রের মূল কপিসহ হাজির হতে হবে।
স্বামীর নাম সংযোজন বা বাদ দেওয়া-
অনেকের বিয়ে হতে পারে ফলে নতুন করে স্বামীর নাম অন্তর্ভুক্তির দরকার হয়। এক্ষেত্রে বিয়ের পর কাবিননামা ও স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। আর যদি বিবাহবিচ্ছেদের কারণে স্বামীর নাম বাদ দিতে চান তবে আবেদনকারীকে তালাকনামার সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
ঠিকানা সংশোধন করতে চাইলে-
আপনার যদি বর্তমান ঠিকানা বা এলাকা পরিবর্তন হয় তবে তাও নতুন করে সংশোধন করার সুযোগ আছে তবে তা বছরে একবার ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে এলাকা কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। যখন তখন ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন করা যাবেনা। তবে ঠিকানা পরিবর্তন না করে সংশোধন (বানান, বাড়ির নম্বর, সড়ক নম্বর ভুল থাকলে) করার সুযোগ ঢাকার প্রকল্প কার্যালয়ে রয়েছে। এছারা স্থায়ী ঠিকানার ক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুল সংশোধন বা পরিবর্তনের সুযোগ সারা বছরই থাকে।
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে-
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় ভোটার নম্বর বা আইডি নম্বর উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এরপর জিডির মূল কপিসহ প্রকল্প কার্যালয় থেকে নেওয়া ছকের আবেদনপত্র নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নিতে হবে। প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে ডুপ্লিকেট পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।
প্রবাসীরা যেভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন-
প্রবাসীরা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার সুযোগ আছে। এ জন্য তাঁদের অবশ্যই দেশে আসতে হবে। তাঁদের থাকতে হবে পাসপোর্ট। আর তাতে বাংলাদেশে আসার সিল (অ্যারাইভাল সিল) থাকতে হবে। পাসপোর্ট এবং বিভিন্ন প্রমাণপত্র নিয়ে তাঁকে যেতে হবে তাঁর থানা বা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া এবং ভোটার হওয়ার আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। সেখানে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আবেদনকারীকে ফরম ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র নিয়ে আসতে হবে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে। এখান থেকে বাদ বাকি প্রক্রিয়া বলে দেয়া হবে।
অতএব, জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে অবশ্যই হতাশ বা ঘাবড়ে না গিয়ে উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।