দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক নেপালী ডাক্তার এ পর্যন্ত ১০ হাজার মানুষের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এতো মানুষের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়ে বিশ্ববাসীর সামনে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন ওই নেপালি ডাক্তার সান্দুক রইত।
তিনি এ পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষের চোখে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। যে কারণে বিশ্ববাসীর সামনে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছেন এই নেপালি ডাক্তার সান্দুক রইত। বার্ধক্যের কারণে যারা চোখে ঝাপসা দেখেন অথবা ছানি পড়ে তাদের চোখে ছোটো একটি অপারেশন করার দরকার পড়ে মূলত তাদের কৃত্রিম লেন্স লাগিয়ে দেন ডা. সান্দুক। আর এতেই চোখে আলো ফিরে পেয়েছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
নেপালের অধিকাংশ জনগোষ্ঠিই দারিদ্রসীমার নিচে অবস্থান করছে। দেশের একমাত্র অর্থকরী শিল্প পর্যটন খাত হওয়ার কারণে এর উপরই নির্ভর করতে হয় অধিকাংশ নেপালিদের। কোনো মৌসুমে যদি পর্যটক কম আসে তবে অনেকটা না খেয়েই থাকতে হয় নেপালীদের। কারণ পাহাড়ি অঞ্চল ও ভৌগোলিক কারণে নেপালিদের পক্ষে ভারি কোনো শিল্প স্থাপন করা সহজ সাধ্য ব্যাপার নয়। এছাড়াও শিল্প স্থাপনে যে মূলধন দরকার তাও তাদের নেই। তাই অর্থসঙ্কট হেতু শারিরীক বিভিন্ন রোগব্যাধিকে এক প্রকার উপেক্ষা করেই চলে নেপালি জনসাধারণ।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ বছর ধরে ডা. রুইত ব্যক্তিগত পর্যায়ে অন্তত ১০ হাজারের মতো মানুষের চোখে দৃষ্টি ফিরিয়ে এনেছেন। তবে এদের মধ্যে সবাই যে নেপালের তা অবশ্য নয়। এশিয়া ও আফ্রিকার বহু অঞ্চলের মানুষকেও তিনি এরকম চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এমনকি তিনি উত্তর কোরিয়াতেও গিয়েছিলেন চক্ষু অপারেশনের জন্য। যে অপারেশন করতে অন্যান্য সার্জনদের বেশ বেগ পাওয়া লাগে, সেই অপারেশন খুব সহজভাবেই করে ফেলেন ডা. রুইত।
শুধু তাই নয়, এই ডাক্তারের এমন গুণ রয়েছে, যে সমস্ত রোগিরা হাসপাতালে আসতে পারেন না, তিনি তার দলবল নিয়ে সেখানে ছুটে যান আর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। নেপাল এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার নজিরও রয়েছে রুইতের। এক নেপালি বৃদ্ধকে এই ডাক্তার অপারেশন করে তার চোখ ভালো করে দেন। যিনি তার জীবনের ৮০টি বছর চোখে দেখতে পাননি এবং রুইত তার চোখ ঠিক করে দেওয়ার পর সেই বৃদ্ধ তার সন্তানকে দেখতে পান। এই অভিজ্ঞতায় নাকি রুইতের জীবনে এক মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে।