দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাত্র ১০ বছর বয়সেই এক বালক একটি কোম্পানির মালিক বনে গেলেন। এই বিস্ময় বালকের নাম করি নিয়েভস।
নামী ব্র্যান্ডের জনপ্রিয় মডেল হিসেবে পরিচিতি, রেফ কুকি তৈরি করে ব্যবসায় সাড়া ফেলে দেওয়া এমন সাফল্য এই ১০ বছর বয়সি বালকের। আবার ইনস্ট্যাগ্রামে অনুরাগীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩৩,০০০ ছাড়িয়েছে। মাত্র ১০ বছর বয়সে সেলিব্রিটির তকমা অর্জন করে সফল হয়েছেন নিউ ইয়র্কের এই বিস্ময় বালক করি নিয়েভস।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, এক সময় নিউ ইয়র্কের কনকনে ঠাণ্ডায় বাসে চড়ে রোজ স্কুল যেতেও প্রবল আপত্তি ছিল করির। তার মায়ের ক্ষমতাও ছিল না গাড়ি কেনার। তাই ৫ বছরের করি ঠিক করে, অর্থ উপার্জন করা ছাড়া তার কোনো গতি নেই। যেই ভাবা সেই কাজ! বাড়ির বাইরে গরম কোকো বিক্রির ছোট্ট স্টল খুললো সে। ধীরে ধীরে সেখানে মায়ের তৈরি কিছু বেক করা খাবার যোগ করতে থাকে করি। আর এভাবেই পথচলা শুরু হয় ‘মিস্টার করি’স কুকিজ’।
প্রথম দিকে ইন্টারনেট ঘেঁটে কুকি তৈরির রকম-সকম রপ্ত করলেও পরে মাথা খাটিয়ে নিজস্ব রেসিপি উদ্ভাবন করতে থাকে করি। করি জানিয়েছে, তার কুকির ৭৫ শতাংশ উপাদানই হচ্ছে জৈবিক। আবার ব্যবহার করা হয় না কোনও সংরক্ষক বা প্রিজারভেটিভস।
মাত্র দু’ বছর যেতে না যেতেই ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে করি’র। ২০১২ সালে মা ও তার ছেলে মিলে সংস্থাটির সরকারি নথিভুক্তিকরণ করায়। ততদিনে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাড়ির হেঁশেলে আর কুলিয়ে ওঠছিলে না। তাই কুকি তৈরি করতে বাণিজ্যিক কিচেনের ব্যবস্থা করে।
বর্তমানে সেখানে প্রতি সপ্তাহ শেষে ১ হাজার কুকি তৈরি করা হয়। সামনেই শীতের ছুটি। তাই বড়সড় অর্ডারের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে করি’স কুকিজ-এর। আবার সংস্থার ওয়েবসাইট মারফতও চলেছে বিপুল বিক্রি। সম্প্রতি এক টিভি শো’য়ে অংশগ্রহণ করে সংস্থার সিইও করি নিয়েভস। করি নিয়েভস জানায়, ব্যবসা শুরুর সময় ‘মাস্টার বেকার’ হিসেবে তার মায়ের আয় ছিল মাত্র ১৫ ডলার, কিন্তু বিক্রি বাড়ায় তাঁর বেতন ১০ ডলার বাড়ানো হয়েছে। ওই টক শো’য়ে এক আলোকচিত্র সংস্থার তরফে একটি কুকি জারে তাকে ১০ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, টিভি চ্যানেলটির তরফ হতে উপহার দেওয়া হয় মিস্টার করি’স কুকিজ-এর লোগো সমৃদ্ধ ঝাঁ-চকচকে একটি গাড়ি। অনুষ্ঠানে দর্শক আসনে উপস্থিত করির মা এই দৃশ্য দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে যান।
কিন্তু এখানেই থামতে চায় না করি। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র করি জানিয়েছে, স্কুলের পাঠ শেষ করে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়। আপাতত উচ্চতর বিদ্যার্জনের জন্য সে অর্থ সঞ্চয় করছে বলেও জানায়।
আবার ইনস্ট্যাগ্রাম পেজে করির পোশাক-আশাক নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তার ভক্তরা। অনেকেই তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কে এইসব বেছে দেন। জবাবে করির মা জানিয়েছেন, ফ্যাশনের প্রতি ছোট থেকেই ঝোঁক ছিল করির। ব্যবসা বাড়ার পর নিজের শখ মেটাতে সে সদাই উদগ্রীব হয়েছে। এ ব্যাপারে করির বক্তব্য হলো, ‘আমার ফ্যাশনদুরস্ত ভাবমূর্তি কুকি বেচতে সাহায্য করে। তাই সাজগোজ করলে এমন কিইবা ক্ষতি?’
করির এমন ফ্যাশন সেন্স দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে বিশ্ববিখ্যাত পোশাক ব্র্যান্ডগুলিও। ইতিমধ্যেই টমি হিলফিগার এবং র্যাল্ফ ল্যরেনের মতো নামী ব্র্যান্ড তাকে মডেল করে শ্যুট করেছে। এছাড়া টিভি কমার্শিয়ালে অভিনয় করেও নাম করেছে কুকি কোম্পানির খুদে এই কর্তাব্যক্তি করি নিয়েভস। মোটকথা বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই বিস্ময় বালক করি নিয়েভস।