দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পে-কমিশনের প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। এতে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ বেতন ১ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২শ’ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার সকাল ৯টায় পে-কমিশনের প্রতিবেদন পেশ করা হয়। বহুল প্রতিক্ষীত এই জাতীয় পে-কমিশনের প্রতিবেদনে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ বেতন এক লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন বেতন ৮ হাজার ২শ’ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাতে প্রতিবেদন তুলে দেন কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কমিশনের প্রস্তাব আগামী বছরের ১ জুলাই হতে বাস্তবায়ন করা হবে এমনটিই আশা করা হচ্ছে।
পে-কমিশনের প্রতিবেদনে প্রস্তাব করা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বেতন একলাখ টাকা ও সিনিয়র সচিবের বেতন হবে ৮৮ হাজার টাকা। এছাড়া সাধারণ কর্মচারী হতে সচিব পর্যন্ত সর্বোচ্চ বেতন ৮০ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২শ’ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ব্যয় হবে ৬০ হাজার কোটি টাকা। যারা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন তারা প্রতিমাসে মূল বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৪ হাজার টাকা পাবেন।
জানা গেছে, বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনভাতা বাবদ ৩৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। নতুন পে-কমিশন বাস্তাবায়ন করা হলে বছরে ২২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হবে। ২০ গ্রেডের পরিবর্তে বেতন কাঠামো ১৬ গ্রেডে নামিয়ে এনে বেতন বাড়ানো হচ্ছে। সারাদেশের ১৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এই পে-কমিশনের আওতায় আসবে।
অর্থমন্ত্রীর নিকট পে-কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পে-কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, কমিশনের অষ্টম বেতন কাঠামোতে বাড়িভাড়া, গৃহনির্মাণ, চিকিৎসাভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য স্বল্পসুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে এই কাঠামোতে। এই ঋণের পরিমাণ হতে পারে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত।
পে-কমিশনের চেয়ারম্যান আরও জানান, জাতীয় বেতন স্কেল-২০০৯’-এ সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি করা হয়। এই মুহূর্তে সরকারি চাকরিজীবীরা ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা পাচ্ছেন,। এটি ২০১৩ সালের ১ জুলাই হতে কার্যকর করা হয়েছে।
পে-কমিশনের এবারের প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো সরকারি চাকুরেদের স্বাস্থ্যবীমা এবং এককালীন চিকিৎসা খরচ দেওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। আবার এই বীমা সুবিধা পরিবারের সদস্যরাও পাবেন। পাশাপাশি চাকরিজীবীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের নামে ৫ বছর মেয়াদি একটি স্বাস্থ্যকার্ড ইস্যু করার কথা বলা হতে পারে এই প্রতিবেদনে।
সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন বেতন কাঠামোর আওতায় আসবেন। এছাড়া শিক্ষকদের বিষয়েও এই কমিশনে সুপারিশ থাকবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর জন্য নতুন এই বেতন কাঠামো প্রণয়নের লক্ষ্যে গত বছরের ২৪ নভেম্বর পে-কমিশন গঠন করা হযেছিল। একই সঙ্গে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যকার বিভিন্ন বৈষম্য দূরীকরণে পরামর্শ দেওয়ার লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছিল পে-অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন।