দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক পরিবেশ বিপর্যযের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। গত কয়েকদিন হলো কক্সবাজারে জোয়ারে ভাসছে মৃত কচ্ছপ। এসব কচ্ছপের শরীরে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন।
গত ক’দিন ধরে কক্সবাজার ও এর আশপাশের সমুদ্র উপকূলে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসছে মা কচ্ছপের মৃতদেহ। আবার এসব কচ্ছপের শরীরে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। গত এক সপ্তাহ ধরে মৃত কচ্ছপ ভেসে আসছে টেকনাফের বাহারছড়া, মহেশখালীয়াপাড়া, শিলখালী, শাহপরীর দ্বীপ এমনকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সৈকতেও ভাসতে দেখা যাচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রতিবছর শীত মৌসুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর হতে এপ্রিল পর্যন্ত সময় কয়েক হাজার মা কচ্ছপ গভীর সমুদ্র হতে ডিম পাড়তে উপকূলের বালুচরে চলে আসে। কিন্তু উপকূলে জেলেদের পুঁতে রাখা জালে আটকা পড়ে মা কচ্ছপগুলো মারা যাচ্ছে। আবার অনেক কচ্ছপ সাগর সাঁতরে কূলে উঠলেও ডিম ছাড়তে পারছে না। এসব ক্লান্ত কচ্ছপগুলো উপকূলে এসেই কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে’ এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
টেকনাফে মহেশখালীয়াপাড়ার জেলেরা বলেছেন, ‘বড় কচ্ছপ জালে আটকা পড়লে জাল ছিঁড়ে ফেলে। তাই জাল রক্ষার জন্য জেলেরা দ্রুত আঘাত করে কচ্ছপ মেরে ফেলেন।’
জেলেদের সঙ্গে কথা বলেও একই কথা জানা গেছে, কচ্ছপ আটকা পড়লে সেই জালে আর মাছ ধরা পড়ে না। উপকূলের জেলের মধ্যে এমন কুসংস্কার চালু রয়েছে। এ ধারণা থেকেও কচ্ছপ মারা হয় বলে জানিয়েছেন জেলেরা।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সংবাদ মাধ্যম বলেন, বুধবার দ্বীপের সৈকতে ৪১টি মৃত কচ্ছপ ভেসে এসেছে। মাছধরা ট্রলারে মা কচ্ছপ আটকা পড়লে জেলেরা হত্যা করছে। জেলেদের সচেতন করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শাহ আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘বড় জালে আটকা পড়া কচ্ছপ দুই হতে তিন ঘণ্টা জীবিত থাকে। এরপর জেলেরা পিটিয়ে হত্যা করে মৃত কচ্ছপ সাগরে নিক্ষেপ করেন। অথচ কচ্ছপ সমুদ্রের ময়লা-আবর্জনা খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে কচ্ছপদের রক্ষা করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কক্সবাজারের পরিবেশ অধিদপ্তর , জালে আটকা পড়লেই জেলেরা পিটিয়ে মা-কচ্ছপ পিটিয়ে না মেরে যাতে করে কচ্ছপকে সাগরে ছেড়ে দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে জেলেদের সচেতন করতে উপকূলে মাইকিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।