দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যু সকলের জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু সব মৃত্যুকে মেনে নেওয়া যায় না। আজ এমনই এক ঘটনার কথা লিখতে গিয়ে সত্যিই হাত কাঁপছে। গতকাল শুক্রবার ৩টার দিকে ওয়াসার পাম্পে পড়ে যান সাড়ে ৩ বছর বয়সের জিয়াদ। কিন্তু জীবিত উদ্ধারের বহু চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আজ জিহাদ সত্যিই ফিরলো, তবে লাশ হয়ে!
মৃত্যু মানুষের একটি নিয়মতান্ত্রিক জিনিস। কিন্তু সব মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারি না। গতকাল শাহজাহানপুর রেল কলোনীর পানি পাম্পে পড়ে যাওয়ার পর জিয়াদকে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসসহ বেসরকারি বহু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেন। রাতভর চলে উদ্ধার অভিযান। রাতে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত থেকে উদ্ধার অভিযান তদারকি করেন। রাতে ৩টায় বিশেষ ক্যামেরা পাঠিয়ে সেখানে কিছু বস্তা ছাড়া অন্যকিছু না থাকায় বলা হয় এখানে কেও পড়েইনি। তারপরও এলাকাবাসীর দাবির মুখে ফায়ার সার্ভিস আজ পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখেন।
আজ জিয়াদকে উদ্ধারের কিছু সময় আগে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর পোনে ৩টার দিকে বেসরকারি কয়েকটি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে জিয়াদকে উদ্ধার করা হয়। একটি চুল্লি আকারের খাঁচা বানানো হয় এবং তার সঙ্গে ক্যামেরাসহ ওটি পাঠিয়ে উদ্ধার করা হয় শিশু জিয়াদকে।
দেখুন উদ্ধার করা সেই ভিডিওটি
https://www.youtube.com/watch?v=aKhF8DMIFzU
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করার কারণে স্থানীয় জনসাধারণ জিয়াদের লাশ উদ্ধারের পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এই বিক্ষোভ এখনও চলছে কমলাপুর এলাকায়। স্থানীয়রা সিটি করপোরেশনের স্থানীয় অফিস ভেঙ্গে ফেলে। তারা বিক্ষোভ করতে থাকে। জনগণ এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।
রাতভর টিভিতে উদ্ধার অভিযান দেখে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ জিয়াদের জন্য দোয়া করেছেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার ওপরে কারও হাত নেই। তাই দেশের এতো লক্ষ কোটি মানুষের প্রার্থনা সফল হয়নি। শিশু জিয়াদকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সেই জিয়াদ ফিরলো, তবে লাশ হয়ে। জিহাদের মায়ের আহাজারি শুধু শাহজাহানপুর এলাকা নয়, পুরো দেশবাসীকে নাড়া দেয়। কিন্তু সেই জিহাদ ফিরলে মায়ের কোলে, তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে।