দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে মোবাইল এতোটা সস্তা পণ্যে পরিণত হয়েছে যে, মাত্র এক হাজার টাকার মোবাইলেও ক্যামেরা পাওয়া যাবে। কিন্তু সেসব ক্যামেরার ছবি একেবারেই অযোগ্য ক্যামেরা। তবে ইদানিং বেশ কিছু মোবাইলে ভালো ক্যামেরা সংযোজন হয়েছে। সেরা ক্যামেরার কয়েকটি মোবাইলফোন নিয়েই আজকের আয়োজন।
এক সময় ছিল যখন মোবাইলের ক্যামেরায় ছবি তুলে কোন কাজ করা যেতো না। কারণ ক্যামেরার কোয়ালিটি তখন এতোটাই খারাপ ছিল যে কোনো মানের ছবি হতো না। নামেই ছিল ক্যামেরা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে সব মোবাইল বের হচ্ছে সেগুলোর ক্যামেরা অত্যন্ত উন্নতমানের। যে কারণে এখন আর আলাদা কোনো ক্যামেরার প্রয়োজন পড়ে না। এখন মোবাইল ফোনেই অনেক ভালো ছবি তোলা যায়।
অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স (এসএলআর) ক্যামেরার জায়গা স্মার্টফোন দখল করতে পারেনি। এরপরও স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়েও ভালো মানের ছবি তুলছেন অনেকেই। গুগলের নেক্সাস ৬, এলজি’র জি৩-এর মতো হাই এন্ডের স্মার্টফোন দিয়েও অনেক ভালো ছবি তোলা সম্ভব। এরপরও কয়েকটি ফোন রয়েছে। এগুলো আপনার কাঙ্খিত ছবির জন্য আদর্শ মোবাইল হতে পারে। জেনে নিন কয়েকটি ভালো ক্যামেরার মোবাইল ফোন সম্পর্কে:
আইফোন ৬ এবং আইফোন৬ প্লাস
গেলো বছরে শীর্ষ ক্যামেরা ফোন হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিল আইফোন ৫এস। আবার এ বছর আইফোন৬ এবং আইফোন৬ প্লাসে ক্যামেরা প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করেছে অ্যাপল কোম্পানি। এই ক্যামেরায় আরও দ্রুতগতির এবং নিখুঁত ফোকাস সুবিধা সংযুক্ত হয়েছে। আবার (সাইবার প্রযুক্তি) চলমান বস্তুর ছবি তুলতেও নতুন এই আইফোন কার্যকর। আবার ভেতরের বা রাতের বেলা ছবি তোলা হলেও তাও অস্বচ্ছ হয় না। দেখা যায় যে, অনেক ক্যামেরা ফোনে বেশিক্ষণ শাটার খোলা রাখলে ছবি ঘোলা হয়ে যায়। আবার আইফোন৬ প্লাসে ব্লার বা অস্বচ্ছ ছবি ঠেকাতে রয়েছে অ্যান্টি-শেক প্রযুক্তি, যাতে কাঁপা কাঁপা হাতে ছবি তুললেও সে ছবি ঝাঁপসা হবে না, ছবি হবে স্বচ্ছ।
আবার যারা বড় স্ক্রিণের জন্য ফোন কিনবেন, তাদের জন্য আইফোন৬ প্লাস সেরা হবে। অ্যাপল নতুন আইফোনে অতিরিক্ত মেগাপিক্সেল যোগ করেনি ঠিকই, কিন্তু ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাকেও করেছে অনেক উন্নত। আবার যুক্ত হয়েছে, ট্রু টোন ফ্ল্যাশ ও ১.৫ মাইক্রন পিক্সেল সেন্সর। সেইসঙ্গে যুক্ত করেছে দ্রুতগতির অটোফোকাস ক্যামেরার জন্য ফোকাস পিক্সেল।
এই সময়ে সেলফি এখন এক বিশেষ জনপ্রিয় বিষয়। আর তাই নতুন আইফোনের সামনের ক্যামেরাও সেলফি তোলার জন্য উন্নত করা হয়েছে। উন্নত ‘ফেস ডিটেকশন’ প্রযুক্তি সুবিধায় ফেসটাইম এইচডি ক্যামেরা যুক্ত হয়েছে নতুন এই আইফোনে।
আইফোন৬-এ আছে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এতে অন্যান্য ফিচার হিসেবে রয়েছে ডুয়াল এলইডি ফ্ল্যাশ, অ্যাপারচার সাইজ এফ২ ডট ২, ব্যাক ইলুমিনেটেড সেন্সর, ফেস ডিটেকশন, অটো ফোকাস, টাচ টু ফোকাস, ডিজিটাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন, ডিজিটাল জুম, জিও ট্যাগিং, এইচডিআর প্যানোরমা। আবার সামনেও রয়েছে ১.২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। দাম ৬৪৯ এবং ৭৪৯ মার্কিন ডলার হতে শুরু।
স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট ৪ এবং নোট এজ
ক্যামেরায় তোলা ছবি আর নোট ফোনে ছবির মধ্যে অবশ্য কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। আর রংসমৃদ্ধ ছবি বলতে নোট ফোনে তোলা ছবিকেই সেরা ছবি বলতে হবে। নোট ৪ দিয়ে তোলা ছবিকে যে কেও ‘চমৎকার’ ছবি বলতে বাধ্য। নোটের সঙ্গে থাকা অ্যামোলেড স্ক্রিণ প্রযুক্তি তাতে বিশেষ অবদান রাখে। এই ফোনে কম আলোতেও অনেক ভালো ছবি ওঠে। এমনটি এতে অ্যান্টি শেকিং প্রযুক্তি থাকার কারণে হাত কাপলেও ছবি ভালো ওঠে। দাম ৭০০ এবং ৮৪০ মার্কিন ডলার হতে শুরু।
ভালো ক্যামেরার জন্য আরেক মোবাইল মাইক্রোসফট লুমিয়া আইকন
ভালো ক্যামেরা ফিচারের ফোন হিসেবে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ফোন হলো, মাইক্রোসফট লুমিয়া আইকন। মাইক্রোসফটের ফ্ল্যাগশিপ এই স্মার্টফোনটিতে ৫ ইঞ্চির অ্যামোলেড ডিসপ্লে রয়েছে। লুমিয়া আইকনে কানেক্টিভিটি সুবিধার মধ্যে রয়েছে ওয়াইফাই, হটস্পট, এটুডিপি ব্লুটুথ, মাইক্রোইউএসবি ২.০। উচ্চগতির থ্রিজি এবং ৪জি নেটওয়ার্ক সমর্থন করে এই ফোনটি। এতে রয়েছে ২০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এর ক্যামেরা লেন্স কার্ল জেইস প্রযুক্তির। আরও্র রয়েছে ডুয়াল এলইডি ফ্ল্যাশ । নিখুঁত এবং সর্বোচ্চ কোয়ালিটির ছবি তোলা যায়। ফ্ল্যাশ, কালার ব্যালেন্স, শাটার স্পিড, আইএসও, এক্সপোজার সবকিছুই ডিএসএলআরের মতো ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই ফোনটির সামনের ক্যামেরা ১.২ মেগাপিক্সেল। দাম ৪৯৯ মার্কিন ডলার।
এছাড়াও বাংলাদেশের বাজারে বাংলাদেশী টাকায় ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ বা ২৫ হাজার টাকায় যেসব ক্যামেরা মোবাইল রয়েছে সেগুলোর ক্যামেরাও মোটামুটি ভালো। একটু দেখে বুঝে মোবাইল কিনলে ছবি তোলার জন্য আপনাকে আলাদা কোনো ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে না। মোবাইলের ক্যামেরায় আপনার পারিবারিক ছবি হতে শুরু করে সব ছবিই তোলা সম্ভব।