দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গতকাল ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বর এ সময় পরিণত হয় এক মহাসমুদ্রে। হেফাজতের মহাসমাবেশ থেকে ১৩ দফা দাবি সংবলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে। সংগঠনটির নায়েবে আমীর মুফতি ফয়জুল্লাহ এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
ঘোষণার প্রথম দফায় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বর্জন করে ধর্মের শাশ্বত সৌন্দর্যে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপনের দাবি জানানো হয়।
২য় দফায় বলা হয়, ভবিষ্যতে সব রকম ইসলাম অবমাননার দুঃসাহস বন্ধ করে নাস্তিকতাবাদ, ধর্মদ্রোহ ও ইসলাম অবমাননাকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। শাহবাগ আন্দোলনের সংগঠক ও নেতৃত্বদানকারী চিহ্নিত নাস্তিক মুরতাদদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
৩য় দফায় আল্লাহ, রাসূল, কোরআন ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা প্রচার রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করার দাবি করা হয়। ৪র্থ দফায় বলা হয়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আল্লাহ বিশ্বাসী ও রাসূলপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান দেখাতে হবে। নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানানো হয়।
৫ম দফা দাবিতে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলন-বিক্ষোভে গ্রেফতারকৃত সব আলেম-উলামা, মাদ্রাসা ছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
ছয় দফায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করার দাবি করা হয়েছে।
৭ম দফায় বলা হয়, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব ধরনের ধর্মদ্রোহ, চিন্তা ও আচরণগত অনাচার, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, ব্যভিচার, জাতীয় পর্যায়ে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোসহ অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
৮ম দফায় বলা হয়েছে, ইসলামবিরোধীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। বন্ধ করতে হবে তাদের ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা এবং নিষিদ্ধ করতে হবে তাদের সব প্রচারণা ও প্রকাশনা। তাদের পণ্য প্রাণ, আরএফএল, সিজান ইত্যাদি বর্জন করারও দাবি তোলা হয়েছে।
৯ম দফায় মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির নগরীতে রূপান্তর বন্ধ, দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ ভার্সিটির ক্যাম্পাসে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও ইসলামবিরোধী নারীনীতি বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
১০ম দফায় বলা হয়, প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১১ দফায় বলা হয়েছে, দেশের স্বাধীন ও খালিছ ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র কওমি মাদ্রাসাগুলোকে স্বাধীনভাবে দ্বীনি খেদমত করে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
১২ দফায় দাবি ছিল, রেডিও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা এবং নাটক সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্র বন্ধ করতে হবে।
১৩ দফা দাবিতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিওগুলোর অপতৎপরতা এবং খ্রিস্টান মিশনারিদের ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।