দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও বিশ্বকাপ ট্রফির স্বাদ পাননি এমন কয়েকজন কিংবদন্তি রয়েছেন আজকের আয়োজনে।
যারা দেশের জন্য খেলেন তাদের কাছে বিশ্বকাপ ট্রফি উচিয়ে ধরা এক বিশাল আনন্দের ব্যাপার। কিন্তু খ্যাতি পাওয়ার পরেও অনেক খেলোয়াড় সে সুযোগ পাননা। এমন ঘটনাও রয়েছে। বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করেছেন প্রতাপের সঙ্গে। আবার ক্রিকেট ক্যারিয়ার জুড়ে অনেক প্রভাব থাকলেও জয়ের দেখা পাননি এমন খেলোয়ারের সংখ্যাও কম নয়। আর তাই শিরোপা জয় না করার কারণে তাদের অভাগাই বলতে হয়। বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ নিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করতে হয়েছে এমন অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে। বিশ্বকাপ জিততে না পারা সেইসব ক্রিকাটারদের কথা তুলে ধরা হলো আজকের এই প্রতিবেদনে।
সৌরভ গাঙ্গুলি, ভারত
সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্বেই ভারতীয় ক্রিকেটের চেহারাটা পাল্টে গিয়েছিলো। তিনি দলের মধ্যে এনেছিলেন তীব্র লড়াইয়ের মানসিকতা। কিন্তু তারপরও তিনি জিততে পারেননি বিশ্বকাপ। সৌরভ গাঙ্গুলি ক্ষুরধার ক্রিকেটজ্ঞান সমৃদ্ধ অধিনায়কত্বের জোরেই ২০০৩ সালে ভারত পৌঁছে যায় বিশ্বকাপের ফাইনালে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় শেষ পর্যন্ত। ২০০৭ সালে ভারত গ্রুপ পর্ব হতে বিদায় নিলেও ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রাহুল দাব্রিড়ের সঙ্গে ৩১৮ রানের এক বিশাল পার্টানারশিপ করে রেকর্ড গড়েছিলেন কোলকাতার এই মহারাজ। ওই ম্যাচে সৌরভ গাঙ্গুলি খেলেছিলেন ১৮৩ রানের এক ইনিংস। সৌরভ গাঙ্গুলি ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপে খেলেন।
ব্রায়ান লারা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ব্রায়ান লারা যাকে ক্রিকেটের বরপুত্র বলা হয়ে থাকে। যাকে সর্বকালের সেরা প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দুনিয়াব্যাপী ক্রিকেটভক্তদের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ করেছেন যিনি কিন্তু পাননি বিশ্বকাপ শিরোপা। ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে এসে মাত্র চার রানে হেরে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৭ সালে নিজ দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংস খেলেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রান করে রান আউট হয়েছিলেন এই ক্রিকেটার। ১৯৯২, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপ খেলেছেন ব্রায়ান লারা।
সাঈদ আনোয়ার, পাকিস্তান
পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ারকে চেনেন না এমন লোক পাওয়া যাবে না। খ্যাতির চূড়ান্ত শিখরে উঠেও বিশ্বকাপ জিততে পারেননি তিনি। আক্রমণাত্মক এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বহুকাল। টি-টোয়েন্টি যুগ শুরুর আগেই সাঈদ আনোয়ারের স্ট্রাইক রেট থাকতো ৮০ এর ঘরে। ভারতের বিপক্ষে তার ১৯৪ রানের ইনিংসটি বহুদিন একদিনের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড ধরে রেখতে সমর্থ হয়েছিলেন। ’৯৬ সালে ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল হতেই ছিটকে গিয়েছিল তার দল। এরপরের আসর ’৯৯ বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি পাকিস্তান। সাঈদ আনোয়ার খেলেছেন ১৯৯৬, ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে।
জ্যাক ক্যালিস, দক্ষিণ আফ্রিকা
সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস। খ্যাতি থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো তারও পোড়া কপাল। ব্যক্তিগত অর্জনের খাতায় সবই পেলেও পাননি কোনো বিশ্বকাপ। ১৯৯৯ ও ২০০৭ আসরে সেমিফাইনালে তার দল জিততে জিততে হেরে যায়।
রাহুল দ্রাবিড়, ভারত
বিশ্বকাপ জেতা হয়নি এমন আরও একজন হলেন ‘দ্য ওয়াল’ নামে পরিচিত ভারতীয় লিজেন্ড রাহুল দ্রাবিড়। রাহুল দ্রাবিড় খেলেছেন ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ সালের বিশ্ব আসরে। ২০০৩ সালে তার দল ফাইনালে গেলেও অস্ট্রেলিয়া শিরোপা বঞ্চিত করে তাদের।
ওয়াকার ইউনুস, পাকিস্তান
বিশ্বকাপ জিততে না পারা কিংবদন্তিদের তালিকায় আরেক দুর্ভাগা ক্রিকেটারের নাম পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস। এই গতি তারকা ১৯৯২ সালের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি। অথচ সেবারই পাকিস্তান শিরোপা জেতে। এরপর ১৯৯৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিতে হয় পাকিস্তানকে। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা বঞ্চিত থাকতে হয়েছিল এই দুর্ধর্ষ পেসারকে।
অনিল কুম্বলে, ভারত
পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৯৯ সালে দিল্লি টেস্টে এক ইনিংসে দশ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতীয় এই লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে। তার কপালেও জোটেনি বিশ্বকাপ ট্রফি।
কার্টলি অ্যাম্ব্রোস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ক্রিকেট ইতিহাসে আগ্রাসী পেস বোলিংয়ের উদাহরণ হয়ে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কার্টলি অ্যাম্ব্রোস। ক্যারিয়ার জুড়ে ব্যাটসম্যানদের কাছে বিভীষিকা হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারও কপালে জোটেনি বিশ্বকাপ শিরোপা। ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে হেরে বিদায় নেয় তার দল।