দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যতম সন্দেহভাজন শফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পেয়েছে র্যাব।
অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন শফিউর রহমান ফারাবীকে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আটক করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ফারাবীকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ফারাবী সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন কি না-এমন এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, কোনো অপরাধীই প্রথমে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে না। জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে; তবে কৌশলগত কারণেই এখনই সব তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, ফারাবী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতেন। তবে তিনি পড়াশোনা সম্পন্ন করতে পারেননি। প্রথমে তিনি বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখি করতেন, পরে নিজের নামে ‘ফারাবী ব্লগ’ চালু করেন।
র্যাবের ভাষ্য মতে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারাবী দাবি করেছেন, ব্লগে লেখালেখির সূত্রে অভিজিৎ রায়ের লেখার সঙ্গে তিনি পরিচিত হন। এক পর্যায়ে লেখালেখি নিয়েই অভিজিতের সঙ্গে তার মতবিরোধ দেখা দেয়। গত দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছেন তিনি।
তবে র্যাব জানিয়েছে, অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ফারাবীর সম্পৃক্ততার নানা তথ্য প্রমাণ তারা পেয়েছে। যেমন, অভিজিৎ রায় ও তাঁর পরিবারের বিভিন্ন তথ্য ফারাবী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনুসারীদের মাঝে প্রচার করে আসছিলেন। তাঁকে হত্যার জন্য উসকানিও দিতেন। ফারাবী তার ফেসবুকে জানিয়েছেন, অভিজিৎ তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। তার ব্যাপারে আমেরিকায় বসবাসরত তার অনুসারীরা খোঁজ-খবর রাখছে। আরেকবার অভিজিতের পরিবারের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ফারাবী বলেছেন, ‘অভিজিৎ রায় আমেরিকায় থাকে। তাই তাকে এখন হত্যা করা সম্ভব না। তবে সে যখন দেশে আসবে, তখন তাকে হত্যা করা হবে।’
উল্লেখ্য, ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা হতে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অভিজিতকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হামলার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ গুরুতরভাবে জখম হন। তিনি এখন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ফারাবী এর আগেও শাহবাগ আন্দোলনের কর্মী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারের জানাজা পড়ানোর কারণে ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হন ফারাবী। পরে জামিনে মুক্তি পায় ফারাবী।