দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে ম্যারাথনে বোমা বিস্ফোরণে বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল ১৫ এপ্রিল এই ম্যারাথন আয়োজন করা হয়েছিল। ম্যারাথনটি যখন চলছিল তখন হঠাৎ বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এ সময় মানুষ দিক-বিদিক ছোটা-ছুটি করতে থাকে। এ সময় অন্তত ৩ জন নিহত ও ৮ শিশুসহ অন্তত ১৫০ জন আহত হয়।
১৫ এপ্রিল বেলা পৌনে ৩টার দিকে বস্টন ম্যারাথনের ফিনিশিং লাইনের কাছাকাছি স্থানে বিকট শব্দে পর পর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় পুরো এলাকায় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। একে একে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে থাকেন হতাহতরা। ২৭ হাজার দৌড়বিদদের কেও কেও তখনো ফিনিশিং লাইন ছুঁয়ে ইতিহাসের অংশ হওয়ার জন্য দৌড়ে আসছিলেন। তবে দুই ঘণ্টা আগেই প্রথম দিকের দৌড়বিদরা তাদের দৌড় শেষ করেন। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই দর্শক। এদের কারো হাত-পা, কারো শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে নয়তো গভীর ক্ষত হয়েছে।
অনলাইন পত্রিকা সূত্র জানায়, ভয়াবহ এই ঘটনাকে অনেকেই সন্ত্রাসী হামলা বলে মনে করছেন। তবে ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় বলেছেন, আমরা জানি না কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে যেই এর জন্য দায়ী হোক খুঁজে বের করা হবে। তিনি বলেছেন, এই হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনবো।
ঘটনার পর বস্টনের বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাবওয়ে সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। বোস্টন পুলিশ সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার কিংবা কোথা ভিড় না জমানোর নির্দেশ দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দফতর বলেছে, এ হামলা অত্যন্ত সংগঠিত ও পরিকল্পিত। তারা একে সন্ত্রাসী হামলা বলেই জানিয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ওমাবা একে সন্ত্রাসী হামলা বলেননি। তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করবো কে এই কাজ করেছে এবং কেনো করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বস্টন ম্যারাথনের ফিনিশিং লাইনের কাছাকাছি স্থানে বিস্ফোরণ দুটি ঘটানো হয়। প্রথম বিস্ফোরণটির কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে। বস্টনের ডাউনটাউন কপলে স্কয়ারে এ দুটি বোমা বিস্ফোরনের পর গোটা এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, ১৫ এপ্রিল সকালে এই ঐতিহ্যবাহী ম্যারাথন শুরু হয়। ২৭ হাজার দৌড়বিদ এই ম্যারাথনে অংশ নেন। বোমা বিস্ফোরণের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই ম্যারাথন সম্পন্ন করতে শুরু করেন দৌড়বিদরা। তবে শেষের দিকেও অনেকেই তাদের দৌড় শেষ করছিলেন। ঠিক এমনই একটি সময় বেলা পৌনে তিনটার সময় বিস্ফোরণ দুটি ঘটে। এসময় দেখা যায় দৌড়বিদদের কয়েকজনসহ, ম্যারাথনের ভলান্টিয়ার্স ও সাধারণ দর্শকরা বোমার আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে থাকেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা দ্রুত ছুটে এসে আহতদের ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা দেয় এবং পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালগুলো জানায়, তারা এ পর্যন্ত অন্তত ১৪১ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে।
এদিকে বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থল থেকে আরও দুটি অবিস্ফোরিত বস্তু পাওয়া যায়। ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে লোকজন সরিয়ে দেয়। পুরো এলাকা সিল করে দেয়। অবিস্ফোরিত বস্তু থেকে কারা এর সঙ্গে জড়িত তা নির্দেশ করার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহী এই ম্যারাথনে ২৭ হাজার দৌড়বিদ অংশ নেন। ম্যাসাচুসেটস-এর দেশপ্রেম দিবসে প্রতিবছর এই ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়। দিনটি থাকে রাজ্যের সাধারণ ছুটির দিন।