দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। দীর্ঘদিন দিন ধরে চলে আসা সেই নীতির কি এবার পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। আসলেও কি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র?
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। দীর্ঘদিন দিন ধরে চলে আসা সেই নীতির কি এবার পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। আসলেও কি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র? এমন মনোভাব দেখা গেছে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার। বিশ্বের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাইতো নতুন করে মেরুকরণের চেষ্টা করছেন।
এর মূল কারণ হলো, অতীতে বহুবার জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে ভেস্তে যায়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এবার দেশটি নিজেই চিন্তা করছে এতে স্বাক্ষরের করার। ইসরাইলের সদ্যসমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনের সময় এক প্রচারাভিযানে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর একটি মন্তব্যই এর অন্যতম কারণ বলে ধরা হচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে ডানপন্থী ভোট লাভের সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে নিজের প্রধানমন্ত্রীত্বে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠিত হবে না বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন নেতানিয়াহু! এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখেও পড়েন তিনি। নির্বাচনে জয়লাভের পর আগের অবস্থান হতে সরে এসে দুই রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কমপক্ষে তিনবার নিজের অবস্থান পুনর্ব্যাক্ত করেন। তবে এবার তার মন্তব্যে- কিছুতেই গলতে রাজী নয় যুক্তরাষ্ট্র। আগের মন্তব্যটিকেই তার চূড়ান্ত মনোভাব হিসেবে ধরে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সিএনএন এমন খবর দিয়েছে।
গত শনিবার হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ‘আমরা তার কথাটি ধরে নিয়েছি, যখন তিনি (নেতানিয়াহু) বলেছিলেন যে, তার প্রধানমন্ত্রীত্বকালে অন্তত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। ওই অঞ্চলে আমরা কখনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখতে চাই না। আর তা নিশ্চিত করতে বাকী যেসব বিকল্প উপায় রয়েছে, সেগুলো ভেবে দেখছি আমরা।’
নেতানিয়াহু সদ্যসমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করার পর এটিই এই বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্টের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্য। নিজের প্রচারাভিযানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে দেবেন না, বইসরাইলি ভোটারদের কাছে এমন অঙ্গীকার করেছিলেন নেতানিয়াহু। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের পরপরই সুর পাল্টে দুই রাষ্ট্র প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন নেতানিয়াহু।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, সাধারণতভাবে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের পর বিজয়ীকে সঙ্গেসঙ্গেই ফোন করে অভিনন্দন জানান ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানাতে পুরো ২ দিন সময় নিয়েছেন ওবামা। তাদের কথোপকথনে দুই রাষ্ট্র সমাধান সম্পর্কে নিজের সত্যিকার অবস্থান নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন কিনা, সেটি সাংবাদিকদের জানাতে অস্বীকার করেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জোশ আর্নেস্ট। কিন্তু ওবামা নেতানিয়াহুকে নাকি বলেছিলেন যে, ইসরাইলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ ‘পুনর্বিবেচনা’ করা হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র সৃষ্টি সম্পর্কে নেতানিয়াহুর উস্কানিমূলক মন্তব্যের পরই ওবামা তাকে এমন কথা জানান। ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমনকি এখন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদান সম্পর্কিত জাতিসংঘের প্রস্তাবটিতেও স্বাক্ষরের কথা বিবেচনা করছে। অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র বিরোধীতার কারণে ওই প্রস্তাব কখনও পাশ হয়নি। ‘আরব ভোটারদের নিয়ে নেতানিয়াহুর বাগাড়ম্বরপূর্ণ মন্তব্য ইসরাইলের ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’ এমন মন্তব্যও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা। আর তাই সবকিছু বিবেচনায় এনে নতুন এক মেরুকরণের দিকে যাচ্ছে ফিলিস্তিন ইস্যুটি নিয়ে। আর এই মনোভাবকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা পজেটিভ হিসেবেই দেখছেন।