দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে যৌথভাবে বিমান হামলা চালালো মার্কিন-ব্রিটিশ বাহিনী। লোহিত সাগরে একের পর এক জাহাজে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এই হামলা চালালো।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে যে, হুতি গোষ্ঠীর ওপর গতকালকের (সোমবার) এই হামলায় ৮টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে। যার মধ্যে একটি ভূগর্ভস্থ স্টোরেজ সাইট ও হুতি ক্ষেপণাস্ত্র এবং নজরদারি সক্ষমতাও রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান-সমর্থিত হুতিরা লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট দিয়ে যাতায়াতকারী ইসরায়েল এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য বলেছে, তারা ‘বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ’ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।
পেন্টাগনের জারি করা এক যৌথ বিবৃতিতে হুতিদের বিরুদ্ধে ‘আনুপাতিক ও প্রয়োজনীয় আরও একটি হামলার’ কথা নিশ্চিত করা হয়। বিবৃতিটিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের লক্ষ্য উত্তেজনা হ্রাস করা ও লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা। আমরা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চলে জীবন ও বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ রক্ষা করতে দ্বিধা করবো না।’
ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এটি অষ্টম হামলা। গত ১১ জানুয়ারি যৌথ হামলা চালানোর পর এটি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিতীয় যৌথ অভিযান। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থনে এই হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুতিদের হামলা লোহিত সাগরে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে।
এর মধ্যেই হুতিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপকভাবে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য যে, লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট সব জাহাজকেই লক্ষ্যবস্তু করছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি। এর জেরে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর অবস্থানে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের গাজার বাইরেও নতুন করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org