দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা দেখেছি স্কুলে নির্ধারিত ড্রেস পরে যাওয়া বাধ্যতামূলক কিন্তু কখনও শুনিনি যে একটি স্কুলে বাজপাখি পালন বাধ্যতামূলক। কিন্তু এবার তাই ঘটেছে।
ঘটনাটি মধ্য স্লোভাকিয়ার একটি গ্রামের স্কুলের। ওই স্কুলের সপ্তম হতে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এমন একটি অভিনব বিষয় নিয়ে চর্চা করতে হয়। ফ্যালকনরি বা বাজপাখি পোষা। তবে সেটি শখের নয়, বাধ্যতামূলক বিষয়।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, স্টিয়াভনিজস্কে বানিয়ে গ্রামটি একটু ভিন্ন প্রকৃতির। মধ্য স্লোভাকিয়ার স্টিয়াভনিজসা গ্রামটি পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। যদিও গ্রামটি দেখতে একদম ছিমছাম ও নিরিবিলি, তবে এই গ্রামটি একটু রহস্যময়। এখানকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের খেলার সাথী হলো বাজপাখি।
স্কুলের প্রধান পাভেল মিশালের মাথায় এসেছে এই ভিন্নধর্মী চিন্তাটি। তিনিই শিকারি পাখিদের স্কুলের পাঠ্যবিষয়ে অন্তর্ভূক্ত করেছেন। তিনি এই বিচিত্র পন্থায় স্কুলটিকে বাঁচিয়েছেন। তবে শুধু বাজপাখিই নয় এই স্কুলে রয়েছে প্যাঁচা, কাকাতুয়াসহ অনেক রকম পাখি।
সারা নামে ১২ বছর বয়সী এক বালক এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘প্রথমে পাখিগুলোকে দেখলে আমার ভয় লাগতো। কিন্তু এখন আর ভয় লাগে না, এমনকি ঈগল পাখি দেখলেও না।’
জানা গেছে, এই স্কুলে বাজপাখি পোষা সপ্তম শ্রেণী হতে নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক পাঠ্য বিষয়। তবে খুদে পড়ুয়াদেরও উৎসাহ একেবারে কম নয়। ওই স্কুলে শিকারি পাখি পোষা সম্পর্কে শিখতে হয়- যেমন তাদের সাজসরঞ্জাম বা কীভাবে তাদের ধরতে কিংবা রাখতে হয় সেগুলোও শেখানো হয়। আবার বাজপাখিকে কীভাবে ‘টোপর’ পরাতে হয়। স্কুলের নিজস্ব ৪০টি বাজপাখি রয়েছে। কয়েকটি পাখির দাম ৫ হাজার ইউরোর বেশি।
পাভেল বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা পাখিদের দায়িত্ব নিতে শেখে, কেননা তাদের প্রতিদিন পাখিদের জন্য কাজ করতে হয়, এমনকি ছুটি থাকলেও। তারা সিদ্ধান্ত নিতে শেখে, ধৈর্য ধরতে শেখে– কেননা তারা জীবন্ত পশুপাখিদের নিয়ে কাজ করছে। এটা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
এক শিক্ষক জানান, ‘শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর মধ্যে পড়ে, খাবারটাকে কীভাবে ঠিক করে দস্তানার উপর রাখতে হবে। পাখিদের শুধু মাংসটা খাবে, আবার হাতে কামড় দিলে চলবে না।’ এমনিভাবে শিক্ষার্থীদের বাধ্যমূলক বিষয়ে অন্তর্ভূক্ত করে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে আজব এই স্কুলটিতে। যা শুনলে অবাক না হয়ে পারা যায় না।
দেখুন ভিডিওটি