দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ককটেল নিয়ে খেলা যে কবে শেষ হবে তা জাতি জানেনা। পড়ে পাওয়া ককটেলের বিস্ফোরণে একটি শিশু পঙ্গু হতে চলেছে। ককটেল ও বোমার আঘাতে আর কত মানুষকে জীবন দিতে হবে এবং পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে তার কোন ঠিকানা যেনো কারই জানা নেই। বিরোধী দল এবং সরকারি দল উভয় দলই যেনো নীরব দর্শক!
বিরোধী দল বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক ও নেতা-কর্মীদের ছেড়ে না দিলে হরতাল-ধর্মঘট চলবেই। আর সরকারি দল বলছে, হাইকোর্টের আইন মেনেই নির্বাচনে যাবে সরকার। আর বিরোধী দলের নেতাদের ছাড়াও বিষয়টিও আদালতের বিষয়। আসলেও কি তাই? জনগণের কাছে এখন প্রশ্ন অনেক। কিন্তু কেওই সমাধানের কোন পথ দেখাচ্ছেন না। শুধু মুখেই বলি আওড়াচ্ছেন। কিন্তু এই রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আজ সাধারণ মানুষ দিশেহারা। সেদিকে সরকারের কোনই নজর নেই। কারণ দায়িত্বটা সরকারেরই বেশি।
ককটেল বিস্ফোরণ এবং নিস্পাপ শিশুর পঙ্গুত্ব
কুড়িয়ে পাওয়া দুটি ককটেলের একটি ফেলে দিলেও অপরটি হাতেই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে এক শিশুর। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের গতকাল ২২ এপ্রিল বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে ১০ বছরের নিষ্পাপ শিশু তানিয়া আক্তার। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল বললেন, শিশুটির ডান হাতের তিনটি আঙ্গুলে কোনো রক্ত সঞ্চালন নেই। ওই হাতের কব্জিও থেঁতলে গেছে। আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি ভালোভাবে ধুয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কব্জি কেটে ফেলতে হতে পারে। তাকে চিকিৎসা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
শিশুটির বাবা আবদুর রশিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার ছেলে আল আমিন (১১) হাজারীবাগ পার্ক মাঠে গতকাল (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খেলতে গিয়ে কালো টেপে মোড়ানো একটি বস্তু নিয়ে বাসায় ফেরে। টেপ ছাড়িয়ে সে একটা কৌটা দেখতে পায়। এরই এক পর্যায়ে সে তার ক্রিকেট বলে টেপটি পেচাতে থাকে। আর কৌটাটি ছোট বোন তানিয়ার হাতে দিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিতে বলে। জানালা দিয়ে ফেলে দেয়ার সময় তানিয়ার হাতেই এটি বিস্ফোরিত হয়। দ্রুত পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। কয়েকটি স্প্লিন্টার তার আঙ্গুলে বিদ্ধ হয়।
আবদুর রশিদ এলাকার নৈশ্যপ্রহরী হিসাবে কাজ করেন। পরিবার নিয়ে থাকেন হাজারীবাগের ৮ নম্বর কুলাল মহন লেনের পার্কের ঢালে পাগলার বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম গৃহিণী। তানিয়া হাজারীবাগ নূরে হাওয়া মহিলা মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
এই সামান্য ঘটনাটিও হয়তো বড় আকার ধারণ করতে পারে। হয়তো ওই শিশুটিকে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করতে হতে পারে। কিন্তু আজ আমাদের সকলের প্রশ্ন এর জন্য দায়ি কে? কে নেবে এর দায়ভার?