দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ দিনকে দিন ধৈর্যহীন হয়ে পড়ছেন। গবেষণা করে দেখা গেছে, মানুষের মনোযোগ ধরে রাখতে পারে মাত্র ৮ সেকেন্ড!
যে কোনো কাজ করতে হলে লাগে মনোযোগ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গবেষকরা দেখেছেন মানুষ দিনকে দিন ধৈর্যহীন হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে বইয়ের পাতা না দেখে মানুষ চোখ বুলাচ্ছে কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিণে। পৃষ্ঠা ওল্টানোর বদলে স্ক্রল করে নিচে নামছে বা ওপরে উঠছে খুব সহজে। কিন্তু অনলাইনের হাজার হাজার খবরের দুনিয়ায় মানুষ আসলে কী পড়ছে? কতক্ষণই বা মনোযোগ ধরে রাখতে পারছে তারা?
এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখে মাইক্রোসফট করপোরেশনের এক গবেষণা চালায়। গবেষণায় তারা দেখতে পেযেছেন যে, গড়ে একজন মানুষ টানা ৮ সেকেন্ড মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন। এক দশক আগেও যেটি ছিল গড়ে ১২ সেকেন্ড। অর্থাৎ গোল্ডফিশের চেয়েও মানুষের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। গোল্ডফিশ সাধারণতভাবে গড়ে ৯ সেকেন্ড কোনো কিছু মনে রাখতে পারে।
আর এর জন্য গবেষকরা দায়ি করছেন প্রযুক্তির উন্নতিকে। আর সে কারণেই মানুষের মনোযোগ কমে গেছে। মাইক্রোসফটের ৫৪ পাতার গবেষণা প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
মাইক্রোসফট দুই হাজারের বেশি কানাডীয় নাগরিকের ওপর এই গবেষণা চালায়। এদের সবার বয়স ১৮ বছরের বেশি। গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা গবেষকদের সামনে ভিডিও গেম খেলেছেন, অনলাইনে খবর পড়েছেন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। এই সময়ে তাদের আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি রেকর্ডও করা হয়। ডেস্কটপ, ট্যাব, স্মার্টফোনের মতো আধুনিক ডিভাইস ব্যবহার করেছেন তারা।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, ভিডিও বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন কীভাবে নানা ডিভাইসের স্ক্রিণ, কাজ ও কনটেন্ট ভেদে মানুষের মনোযোগের তারতম্য ঘটিয়ে থাকে। গবেষণায় অংশ নেওয়া ১৮ থেহতে ৩৪ বছর বয়সীরা ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের তুলনায় ৩১% বেশি সময় মনোযোগ ধরে রাখতে পেরেছেন। গবেষকরা দেখেছেন, নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি সময় ধরে মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন।
গবেষকরা দেখেছেন, ১৮ হতে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭৭% বলছেন, তারা যখন অবসরে থাকেন, তখন ফোনেই তাদের সব মনোযোগ থাকে। এর কারণ স্মার্টফোনের মাধ্যমেই অধিকাংশ কাজ সারেন তারা। তবে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১০% বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।