দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। আজ শুক্রবার, ১২ জুন ২০১৫ খৃস্টাব্দ, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২ বঙ্গাব্দ, ২৪ শাবান ১৪৩৬ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে ছবিটি দেখছেন এটি ঢাকার ঐতিহাসিক হাজী শাহবাজের মসজিদ। ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিন নেতার মাজারসংলগ্ন এই মসজিদটি অবস্থিত এটিকে ‘লাল মসজিদ’ও বলা হয়।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ও তিন নেতার মাজারলাগোয়া পূর্ব প্রান্তের জায়গাটি বেশ নিরিবিলি, ছিমছাম পরিবেশে এই মসজিদটি অবস্থিত।
প্রায় সাড়ে ৪শ’ বছর আগে ওই জায়গাটি মসজিদ নির্মাণের জন্য বেছে নেন সুফি সাধক এবং ধনী ব্যবসায়ী হজরত হাজী খাজা শাহবাজ। তাঁর নামেই পরিচিত এই মসজিদটি এখনও টিকে রয়েছে কালের সাক্ষী হয়ে। নান্দনিক এই মসজিদ নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা লোকগাথা। কেও একে বলেন জিনের মসজিদ, কারো কাছে পরিচিত জোড়া মসজিদ নামেও। লোকশ্রুতি রয়েছে, খাজা শাহবাজ টঙ্গী হতে এসে জিনদের নিয়ে এই মসজিদে নামাজ পড়তেন। সে জন্যই এর নাম দেওয়া হয় জিন মসজিদ। শোনা যায়, খাজা শাহবাজ মসজিদের পাশেই নিজের জন্য মাজার নির্মাণ করেন। মাজারের কাঠামোও অনেকটা মসজিদের মতোই। সে কারণে এটি জোড়া মসজিদ নামেও অধিক পরিচিত। আবার দেওয়ালের রং লাল থাকায় মসজিদটি ‘লাল মসজিদ’ নামেও পরিচিতি পায়।
মসজিদের পাশের একটি বড় সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, ‘ঢাকার অভিজাত ধনী ব্যবসায়ী ও বিশিষ্ট সুফী সাধক হজরত হাজী খাজা শাহবাজ জীবিত থাকাকালীন এই মসজিদ এবং তাঁর নিজের মাজার নির্মাণ করেছিলেন ১০৮৬ হিজরি।’ সে মোতাবেক মোগল সুবেদার মুহম্মদ আজমের শাসনামলে ১৬৭৯ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
শায়েস্তা খান আমলের স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত ৩ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি ৬৮ ফুট দীর্ঘ ও ২৬ ফুট চওড়া। এর মিম্বর ও চৌকাঠ কালো পাথরের তৈরি। মসজিদের আঙিনাতেই খাজা শাহবাজকে সমাহিত করা হয়। তাঁর সমাধিসৌধ খাজা শাহবাজের দরগা নামে বেশি পরিচিত। এই মসজিদের চার কোণে চারটি অষ্ট কোণাকৃতির মিনার রয়েছে। পূর্ব দিকের দেওয়ালে রয়েছে তিনটি প্রবেশপথ। দক্ষিণ এবং উত্তর দেওয়ালে একটি করে দরজা রয়েছে। এই অঞ্চলে জলবায়ুর আর্দ্রতার কারণে মসজিদের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য দেওয়ালে পাথরের আবরণ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি দরজার চৌকাঠ কালো পাথর দ্বারা তৈরি। ভেতরের পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি আকর্ষণীয় মেহরাব রয়েছে। প্রধান মেহরাবের অলংকরণ বেশ সুন্দর। মসজিদের পাশেই রয়েছে হাজী খাজা শাহবাজের মাজার শরীফ ইমারত- এটি এক গম্বুজবিশিষ্ট। মসজিদের স্থাপত্য নকশা অনেকটা মুসা খাঁ মসজিদ বা লালবাগ কেল্লা মসজিদের মতোই।