দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের এমন দেশও রয়েছে যেখানকার অনেক মানুষই অভুক্ত থাকে খাদ্যের অভাবে। সেখানে আবার পৃথিবীতে এমন দেশও রয়েছে যেখানে খাবার নষ্ট করা হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করে ব্রিটিশরা।
বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ এখনও অনাহারে দিন কাটায়। আমরা ক’জনার খোঁজই বা রাখি? যখন একমুঠো খাবারের অভাবে অভুক্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায় পৃথিবীর বহু মানুষ, ঠিক সেই সময় বিপুল পরিমাণ খাবার অকারণে নষ্ট করছে ইউরোপের মানুষ! এরমধ্যে আবার পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করে ব্রিটিশরা!
এক সমীক্ষার উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো প্রতিবছর ২ কোটি ২০ লাখ টন খাবার নষ্ট করে। আর সবচেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করে থাকে যুক্তরাজ্যের মানুষ। ইউরোপীয় কমিশনের সাহায্যপ্রাপ্ত গবেষকদের এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটার্স নামের সাময়িকীতে গত বুধবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় ভোক্তাদের নষ্ট করা খাবারের মাধ্যমে লুপ্ত হওয়া পানি এবং নাইট্রোজেনের উৎস বিশ্লেষণের জন্য ৬টি দেশের তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করা হয়।
সমীক্ষায় দেখা যায়, যে পরিমাণ খাদ্য নষ্ট করা হয়ে থাকে তার ৮০ শতাংশই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করে ব্রিটিশরা। প্রত্যেক ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদিন ১ টিন করে শিমের বীচি (বিন) নষ্ট করলে যে পরিমাণ খাবার হয় ব্রিটিশরা সেই পরিমাণ খাবার প্রতিদিন নষ্ট করে। সমীক্ষায় দেখা যায়, রোমানিয়ায় খাবার নষ্ট করার পরিমাণ সবচেয়ে কম হলেও তারাও প্রচুর খাবার নষ্ট করে। রোমানিয়াবাসীর নষ্ট করা খাবারের পরিমাণ হলো, প্রত্যেকে প্রতিদিন একটি করে আপেল নষ্ট করার সমান খাদ্য নষ্ট করে থাকে।
গবেষকরা বলেন, ওইসব এলাকার লোকজনকে আরও সতর্কতার সঙ্গে কেনাকাটা করা ও তাদের খাবার গ্রহণের বিষয়ে পরিকল্পনা করার শিক্ষা দেওয়া হলে, খাবার অপচয়ের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করবে। সেক্ষেত্রে খাবারের পেছনে ব্যয় কমবে ও পরিবেশের উপর নষ্ট খাবারের বিরূপ প্রতিক্রিয়াও কমে আসবে।
ইউরোপীয় কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের ওই সমীক্ষার নেতৃত্বদানকারী ডেভি ভ্যানহ্যাম বলেন, ‘প্রায়ই খাবার ভালো থাকতেই ফেলে দেওয়া হয়। তবে বিক্রির তারিখ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক সময় তা করা হয়ে থাকে। এই বিষয়টি এড়ানো সম্ভব বলে আমাদের করণীয় রয়েছে।
ইইউভুক্ত ২৮টি দেশের মধ্যে মাত্র ৬টি দেশের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সমীক্ষা চালানোর কারণ হিসেবে ভ্যানহ্যাম বলেছেন, অন্যান্য দেশের তথ্য-উপাত্ত তেমন একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়, তাই এই ৬টি দেশকে বেছে নেওয়া হয়।
ব্রিটেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, জার্মানি এবং রোমানিয়ার তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ওই সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি নষ্ট করা হয় শব্জি, ফল ও শস্যদানা। কারণ এগুলো ঘরে বেশিদিন রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু বিপুল পরিমাণ মাংসও ফেলে দেওয়া হয়। পানি ও নাইট্রোজেনের উৎসের জন্য এটিই বৃহত্তর ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।