দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা কোমল পানীয়কে নিজেদের খাদ্য তালিকার একটি বিশেষ কিছু মনে করে থাকি। কিন্তু এসব পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি করতে পারে তা ভাবি না। অনেক সময় কোমল পানীয় মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
কোমল পানীয় যাকে আমরা বলি soft drinks হলো মাদক বিহীন একটি তরল পানীয়। বেশিরভাগ কোমল পানীয়তেই কার্বন সমৃদ্ধ পানি, মিষ্টিজাতীয় পদার্থসহ সুগন্ধযুক্ত পদার্থের উপাদান বা ক্যাফেইন থাকে। আমরা হর হামেশায় এটি খেয়ে থাকি। যে কারণে এর ক্ষতিকর দিক রয়েছে তা নিয়ে আমরা কখনও ভাবি না।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখা যায়, একটি ৩৫৫মি.লি এর কোকের ক্যানে প্রায় ১০চা চামচের সম পরিমাণ চিনি থাকে। এইসব চিনি দেহের উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে থাকে। কারণ অতিরিক্ত চিনি দেহে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে দেহে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায় যা সকলের জন্যই ক্ষতিকর। যেমন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর।
এসব অতিরিক্ত চিনি ফ্যাট হিসেবে দেহে সঞ্চিত হতে থাকে যে কারণে দেহের ওজন বেড়ে যায়। পশ্চিমা বিশ্বে মুটিয়ে যাওয়ার হার বাড়ার অন্যতম কারণ হলো এই কোমল পানীয়। আর অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এর অন্যতম কারণ হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। আবার অতিরিক্ত চিনি দাঁতের গর্তজনিত ক্ষয় করে। দাঁতের এনামেল হলুদ করতেও এক ভুমিকা রয়েছে এই কোমল পানীয়ের।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে আরও জানা যায়, প্রত্যাহ কোমল পানীয় পান করার কারণে আমাদের ৩০% ওজন বেড়ে যাবার ঝুঁকি রয়েছে। এক পরীক্ষায় জানা যায় যে, কৃত্রিম চিনি আমাদের মস্তিষ্ককে ভাবতে সাহায্য করে যে এটা মিষ্টি। আর তাই অতিরিক্ত শর্করার প্রতি আমাদের মস্তিষ্ক উত্তেজিত হয়ে পড়ে ও তাতে মস্তিষ্কের বোঝা বেড়ে যেতে পারে।
কোমল পানীয় আরও কি কি ক্ষতি করতে পারে:
# কোমল পানীয়তে ব্যবহৃত কার্বন, ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই দীর্ঘদিন ধরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কম থাকলে হাড় ক্ষয় হয়ে যায় যাকে বলা হয় অস্টিওপোরেসিস।
# ক্যাফেইন শরীরের ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ কমায়, সেই সঙ্গে আমাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুকে উত্তেজিত করে। যে কারণে মানসিক উত্তেজনা বেড়ে যায়। সে কারণে নিদ্রাহীনতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
# কোমল পানীয়তে সোডিয়াম বেনজয়েট পদার্থের অস্তিত্ত বিদ্যমান। শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ আবিস্কার করেছেন যে, সোডিয়াম বেনজয়েট ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মক্ষমতা হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। কোমল পানীয় দেহে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ক্যারামেলের রং আনার জন্যে কোমল পানীয়ের পলি-ইথিলিন গ্লাইকোল নামে যে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেটি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্যে দায়ি।
আরও একটি মজার বিষয় হলো, ডায়েট কোলা নামে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে যে সব কোমল পানীয় বিক্রি হয় তাতে চিনির পরিবর্তে এসপার্টেম নামে একটি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গবেষকরা বলেছেন, দেহের ওপর এই উপাদানটির রয়েছে ৯২ ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব।
এসব ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে যেসব রোগ হতে পারে তা হলো:
# ব্রেন টিউমার
# বন্ধ্যত্ব
# ডায়াবেটিস
# মৃগী
# মানসিক ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি।
কোমল পানীয় যাতে বরফের মতো জমে না যায়, সে জন্যে এটিতে ‘ইথিলিন গ্লাইকোল’ নামের একটি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি অনেকটা আর্সেনিকের মতোই একটি বিষ। এটির কারণে কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। সূত্রঃ bd-article.com