দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই এবার কাজ শুরু করেছে ‘কৃত্রিম’ কিডনি! পরীক্ষাগারে তৈরি কৃত্রিম কিডনি একাধিক প্রাণীর শরীরে সংযোজন করে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেয়েছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যে মানুষের শরীরেও একই ধরনের কিডনি প্রতিস্থাপনের সম্ভাবনার বিষয়টি আরও একধাপ এগিয়ে গেলো বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, টোকিওর জিকেই ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষক তাকাশি ইয়াকু এবং তার সহযোগীরা স্টেম সেল পদ্ধতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রাণীর কিডনির সহায়ক হবে এমন বাড়তি নিষ্কাশন নল তৈরি করেন। এতে প্রস্রাব সংগ্রহ এবং ধারণের জন্য একটি থলি বা ব্লাডার সংযুক্ত রয়েছে। এটি ওই প্রাণীর মূল ব্লাডারে সংযোজন করে গবেষকরা দেখতে পান যে, পরিবর্ধিত ব্লাডারটি ৮ সপ্তাহ পরও সঠিকভাবে কাজ করছে। ইঁদুর এবং শূকরের শরীরে প্রতিস্থাপিত ওই ব্লাডারটি প্রাকৃতিক কিডনির মতোই মূত্র প্রবাহিত করতে সমর্থ হচ্ছে।
প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কিডনির অকার্যকারিতা দূর করতে এই জাপানি গবেষকরা বাড়তি ব্লাডার জুড়ে দেওয়ার পদ্ধতি প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফলও পেয়েছেন। মানুষের ওপর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। তবে এই গবেষণা মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরির একটি লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) স্টেম সেল এবং ওষুধ বিশেষজ্ঞ ক্রিস ম্যাসন জাপানিদের ওই গবেষণা প্রসঙ্গে বলেছেন, এটা চমৎকার একটা অগ্রগতি। তবে এটা মানুষের ক্ষেত্রে কাজ করবে কি না, এখনই নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু ডায়ালাইসিসের রোগীদের কিডনির সঙ্গে বাড়তি নল জুড়ে দেওয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের একটা জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রতিবছর বহু মানুষ কিডনি রোগে মৃত্যুবরণ করে। কিডনি প্রতিস্থাপন করে তাদের বাঁচানোর একটি সুযোগ রয়েছে। মানবদেহের স্টেম সেল হতে পরীক্ষাগারে কার্যকর কিডনি তৈরি করা সম্ভব হলে কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে গবেষকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।