দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডমিনিক প্রজাতন্ত্রের সালিনাস নামক আশ্চর্য এক গ্রাম। এ কারণে আশ্চর্য গ্রাম যেখানে মেয়েরা ১২ বছর বয়সে ছেলে হয়ে যায়!
১২ বছর বয়সে ফেলিশিয়া মেয়ে ছিল। কিন্তু এখন সে ছেলে নাম জনি। পরিবর্তন ঘটেছে তার লিঙ্গের। তবে ডমিনিক প্রজাতন্ত্রের গ্রামবাসীরাও বিষয়টিকে খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন।
শুধুমাত্র জনির ক্ষেত্রেই নয়, ১২ বছর বয়সে এসে এমন রূপান্তর ঘটছে এই গ্রামের অনেকেরই। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন পরিবর্তন হওয়া সম্ভব ঘটনা।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ডমিনিক প্রজাতন্ত্রের সালিনাস গ্রামে অনেক মেয়েই ১২ বছর বয়সে এসে ছেলেতে রূপান্তর হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনাটি সেখানে এতো বেশি ঘটছে যে, ঘটনাটি এখন গ্রামবাসীর স্বাভাবিক একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
কর্নিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনডক্রিনলজিস্ট ড. জুলিয়ান ইমপারেতো সালিনাস গ্রামের এই ঘটনা সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। তিনি গুজব শুনে গ্রামটিতে পরিদর্শনে যান। এই বিষয়টি তার নজরে আসে। এরপর পাপুয়া নিউ গিনিরে সাম্বিয়ান গ্রামগুলোতেও এমন ঘটনা দেখা যায়। কারণ এমন ঘটনা পৃথিবীতে ঘটে তবে সেটি লাখে একটি। কিন্তু এখানকার বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন।
সালিনাস গ্রামের ওই জনি সম্পর্কে জানা যায়, জনি শারীরিকভাবে এখন সম্পূর্ণ ছেলে মানুষ। ১২ বছর আগে সে মেয়ে ছিল আর তার নাম ছিল ফেলিশিয়া। তবে জন্মের পর হতে তাকে তার পরিবার মেয়ে হিসেবেই বড় করে তোলেন। শুধুমাত্র জনিই নয়, তার মতো অনেকেরই এমন পরিবর্তন ঘটেছে তাও আবার ১২ বছর বয়সে। জন্মের সময় মেয়ে থাকলেও বয়ঃসন্ধির সময় ছেলেতে রূপান্তর হয়ে গেছে। এসব শিশুদের বিশেষ নামও ব্যবহার করা হয়। তাদেরকে বলা হয়ে থাকে ‘গুয়েভেডোসেস’। এর অর্থ হলো ‘১২ বছরে লিঙ্গ’। আবার অনেক সময় ‘মাচিহেমব্রাস’ বলা হয়ে থাকে। যার অর্থ ‘প্রথমে নারী- পরে পুরুষ’।
ড. ইমপারতো তাদের নিয়ে অনুসন্ধান করে এর পেছনের কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, মানব শরীরের একটি এনজাইমের অভাব হলে জেনেটিক পরিবর্তন ঘটে। মাতৃগর্ভে এই এনজাইমের কারণে ছেলে বা মেয়ে নির্ধারিত হয়। মাতৃগর্ভে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক উভয়েরই ‘গোনাডস’ নামে একটি হরমোন থাকে। এটিই মূলত দুই পায়ের মাঝে একটি মাংসপিণ্ড সৃষ্টি করে থাকে। তখনই নির্ধারিত হয় ছেলে বা মেয়ে।
ড. জুলিয়ান ইমপারেতো বলেছেন, মাতৃগর্ভেই যেটি হওয়ার কথা ছিলো সেটি ১২ বছর পরে ঘটছে। এই সময় তাদের কণ্ঠ ভারি হয়ে আসছে এবং পুরুষাঙ্গও চলে আসছে। এভাবেই একটি মেয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে ছেলেতে। এখানে একটি প্রশ্ন আসতে পারে। আর তা হলো তাহলে ছেলেগুলো কেনো মেয়েতে রূপান্তরিত হচ্ছে না? অবশ্য এর কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে ১২ বছরে এটি ঘটলেও ৭/৮ বছর বয়স হতেই তারমধ্যে পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এটি সম্পন্ন হয় ১২ বছর বয়স অবধি। তাই ১২ বছর বয়সকেই চিহ্নিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ওই সালিমাসের এখন পর্যন্ত অন্তত ৯০ জন শিশু পরিবর্তিত হয়েছে। এদের সবারই স্বাভাবিক পুরুষদের চেয়ে দাড়ি কম এবং প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড রয়েছে। তথ্যসূত্র: theherald.com.au